দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে শিশু-কিশোরদের নিয়ে ‘বসে আঁকো’ প্রতিযোগিতা সহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে তেলিয়ামুড়ার রাজদূত ক্লাব
তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি: শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনী সুরে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা তেলিয়ামুড়া শহর। প্রতিবছরের মতো এবারও শহরের অন্যতম বনেদি ও ঐতিহ্যবাহী ক্লাব রাজদূত ক্লাব নিয়েছে এক ব্যতিক্রমী ও সমাজমুখী উদ্যোগ। ক্লাব কর্তৃপক্ষ শুধু পূজা উদযাপনেই সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজের নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
এই কর্মসূচিরই অঙ্গ হিসেবে আজ, শহরের চৈতন্য আশ্রম প্রাঙ্গনে আয়োজিত হল এক মনোমুগ্ধকর ‘বসে আঁকো’ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রছাত্রী। ছোট ছোট শিল্পীদের ক্যানভাসে ফুটে উঠেছিল তাদের কল্পনার রং, ভাবনার গভীরতা এবং সৃজনশীলতার ছাপ।
প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের মধ্যে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো ও তাদের আত্মবিশ্বাসকে উজ্জীবিত করা। চিত্রাঙ্কনের বিষয়বস্তু ছিল মুক্ত—প্রকৃতি, পূজা, সমাজ, রঙিন স্বপ্ন ইত্যাদি। প্রতিটি শিশুর হাতে ছিল আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি, যার মাধ্যমে তারা তুলে ধরেছে তাদের নিজস্ব ভাবনা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজদূত ক্লাবের সভাপতি তথা পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মধুসূদন রায়, সহ-সভাপতি নৃপেন্দ্র দেব, সহ-সম্পাদক সৌরভ পোদ্দার, পূজা কমিটির সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ দাস, এবং ক্লাবের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। তাঁরা সকলে শিশু শিল্পীদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং প্রতিযোগীদের হাতে উৎসাহসূচক উপহার তুলে দেন। অতিথিরা বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ শিশুদের মনের বিকাশে সহায়ক হবে এবং আগামী দিনের সমাজ নির্মাণে তাদের ভূমিকা আরও দৃঢ় করবে।”
রাজদূত ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে আগামী দিনগুলোতেও এই ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচি চলবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—সাফাই অভিযান, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, অভিনয় কর্মশালা, রক্তদান শিবির, এবং অসহায়দের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণ ইত্যাদি। ক্লাবের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অভিভাবক, শিক্ষক ও বিশিষ্টজনেরা এই প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বলেন, “রাজদূত ক্লাব বরাবরই তেলিয়ামুড়ার সংস্কৃতিমনা চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। আজকের অনুষ্ঠান সেই ধারাবাহিকতারই প্রতিফলন।”
রাজদূত ক্লাবের এ ধরনের জনমুখী ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় ভরপুর কার্যক্রম তেলিয়ামুড়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আরও দৃঢ় করবে এবং নতুন প্রজন্মকে সমাজ সচেতন ও সৃষ্টিশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে—এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।








