
আমতলিতে চক্ষু চিকিৎসা শিবিরে স্বাস্থ্যসেবার নতুন দিগন্ত, উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক রতন চক্রবর্তী ও পঞ্চায়েত সদস্যরা।
আগরতলা, ১৫ জুন ২০২৫: সেবামূলক স্বাস্থ্যচর্চায় এক অনন্য নজির স্থাপন করল ‘THE HOPE’ নামক একটি মানবিক উদ্যোগ, যারা আয়োজিত এক চক্ষু চিকিৎসা শিবিরে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতাভুক্ত বহু গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন, আধুনিক ফেকো সার্জারি ও বিভিন্ন প্রাথমিক চক্ষু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ প্রদান করল।

এই বিশেষ স্বাস্থ্যশিবিরটি অনুষ্ঠিত হয় ইস্ট নোয়াবাদি আমতলী এলাকার পারুল থাপা স্মৃতি পাঠাগার ও একতারা কমিউনিটি হলে। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে শতাধিক রোগী চোখের বিভিন্ন সমস্যার জন্য এসে চিকিৎসা গ্রহণ করেন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক এবং ছানি রোগে ভুগছিলেন। ক্যাম্পে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ফেকো (Phacoemulsification) প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় এবং অপারেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়। এই মহতী উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খয়েরপুরের মাননীয় বিধায়ক রতন চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যগণ, স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং THE HOPE-এর প্রতিনিধিগণ। উদ্বোধনী ভাষণে বিধায়ক রতন চক্রবর্তী বলেন— “THE HOPE সত্যিকারের এক আশার নাম হয়ে উঠেছে। এই ধরণের সামাজিক ও স্বাস্থ্যভিত্তিক উদ্যোগ আমাদের সমাজে খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা চিকিৎসা খরচ বহন করতে অক্ষম, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর এই প্রচেষ্টা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।” THE HOPE-এর এক মুখপাত্র জানান, এই ক্যাম্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের প্রান্তিক

শ্রেণির মানুষদের মধ্যে দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত সমস্যার প্রাথমিক শনাক্তকরণ ও দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। এ ধরনের ফ্রি ক্যাম্প রাজ্যের অন্যান্য এলাকাতেও করার পরিকল্পনা রয়েছে। রোগীদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা আর্থিক কারণে এতদিন চোখের অপারেশন করাতে পারেননি, কিন্তু এই ক্যাম্পের সুবাদে তাঁরা আবার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবার আশায় বুক বাঁধতে পারছেন। ক্যাম্পে রোগীদের চোখ পরীক্ষা, প্রেসক্রিপশন দেওয়া, ফলোআপের পরামর্শ, এবং যাঁদের অপারেশন প্রয়োজন, তাঁদের হাসপাতালে রেফার করার ব্যবস্থাও রাখা হয়। অনেকে সরাসরি ক্যাম্প থেকেই অপারেশনের তারিখ পেয়ে যান। সঙ্গে বিনামূল্যে ওষুধ ও চশমাও বিতরণ করা হয়।

পঞ্চায়েত সদস্যদের পক্ষ থেকেও ক্যাম্পের আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয় এবং এই উদ্যোগকে সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও মানবিক বলে প্রশংসা করা হয়। এই ক্যাম্প ঘিরে ইস্ট নোয়াবাদি আমতলী এলাকায় স্বাস্থ্য সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি কমিউনিটির মধ্যে সহমর্মিতা ও একত্রে কাজ করার একটি দৃষ্টান্তও স্থাপিত হয়েছে।