
আইজিএম হাসপাতালের সংরক্ষণাগারে আগুন, দাহ্য রাসায়নিকের ঝুঁকি সামলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনল দমকল ও পুলিশ বাহিনী।
আগরতলা, ত্রিপুরা: ত্রিপুরা রাজ্যের অন্যতম প্রধান স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল (IGM) হাসপাতাল-এ আজ দুপুরবেলা ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর এবং ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। হাসপাতালের ভেতরে অবস্থিত অক্সিজেন ও কেমিক্যাল সংরক্ষণাগারের একটি কক্ষে হঠাৎ করেই আগুন লেগে যায়, যার সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে একটি এয়ার কন্ডিশনার (এসি) মেশিন থেকে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং দ্রুত ছুটে আসে দমকল বাহিনী ও পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, দুপুর আনুমানিক ১টা নাগাদ হঠাৎ করে হাসপাতালের ওই নির্দিষ্ট কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং কক্ষে রাখা বেশ কিছু দাহ্য রাসায়নিক দ্রব্য ও অক্সিজেন সিলিন্ডার অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে। হাসপাতাল চত্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রোগী, পরিজন ও কর্মচারীদের মধ্যে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৎপরতা দেখিয়ে দ্রুত ওই কক্ষটি খালি করে ফেলে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য দমকল বিভাগে খবর পাঠায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ত্রিপুরা ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় দমকল কর্মীরা আগুনকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
দমকল বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান,
“প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এসি মেশিনে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। যেহেতু এটি অক্সিজেন ও কেমিক্যাল সংরক্ষণের ঘর, তাই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। তবে সৌভাগ্যবশত, সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়ায় বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো গেছে।”
ঘটনায় কোনো প্রাণহানির খবর না থাকলেও, দাহ্য রাসায়নিক ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের সম্ভাব্য বিস্ফোরণ রোধ করতে পেরে প্রশাসন ও দমকল বাহিনীর তৎপরতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, এই অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানতে এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
হাসপাতাল সুপার জানান,
“রোগী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ভবিষ্যতে ইলেকট্রিক সরঞ্জামের রুটিন পরিদর্শন এবং রক্ষণাবেক্ষণ আরও জোরদার করব। এই ধরনের দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে সতর্ক থাকবে।”
এই ঘটনার পর গোটা হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়নের দাবিও উঠেছে। চিকিৎসা পরিষেবায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।