
উদয়পুর, রবিবার ২৬ মেঃ রবিবার রাত আনুমানিক দশটা নাগাদ ত্রিপুরার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক উত্তেজনাকর ঘটনা ঘটে। রাজ পরিবার ও তিপরা মথা দলের প্রধান প্রদ্যুৎ মানিক্য দেববর্মা গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন। তবে জেলাশাসক এই সাক্ষাৎ প্রত্যাখ্যান করেন, যার জেরে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে তিপরা মথা দলের যুব সংগঠন TIPRA Indigenous Progressive Regional Alliance Youth Federation (YTF)-এর পক্ষ থেকে উদয়পুরে একটি জরুরি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলনের সময়, সাংবাদিকরা প্রদ্যুৎ মানিক্য দেববর্মাকে “রাজা” বা “মহারাজ” না বলে কেবল নাম ধরে সম্বোধন করেন। এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওয়াইটিএফ-এর কয়েকজন যুবক। তাদের মতে, প্রদ্যুৎ মানিক্য শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি রাজ পরিবারের অংশ এবং “মহারাজ” বলেই সম্বোধন করা উচিত ছিল।
ঘটনাটি এখানেই থেমে থাকেনি। অভিযোগ উঠেছে, ওই যুবকরা সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং এমনকি কয়েকজন সাংবাদিককে “বাংলাদেশি” বলে অপমান করে ধমক দেন। সাংবাদিকদের প্রতি এমন আচরণে উদ্বিগ্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, উদয়পুরে কর্মরত সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল গোমতী জেলার এডিশনাল এসপি সৌভিক দে-এর সঙ্গে দেখা করে একটি লিখিত অভিযোগ ও ডেপুটেশন জমা দেন। তারা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ত্রিপুরার সাংবাদিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এই ধরনের আচরণের শিকার হতে হওয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনা আবারো প্রশ্ন তুলেছে – গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং ভিন্নমতকে সম্মান করার সংস্কৃতি কি ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে?