১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমনি সুকুন্তলা সরকার দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে শিশুদের শিক্ষা ও পুষ্টির দায়িত্ব পালন করছেন; তবুও আজও বঞ্চিত মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকে।
নিউজ ডেস্ক । বামুটিয়া, ত্রিপুরা । ৪ নভেম্বর ২০২৫ঃ সরকার যেখানে একের পর এক প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নের সুর তুলছে, সেখানে দক্ষিণ রাঙ্গুটিয়ার এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এখনও জ্বলছে না বিদ্যুতের বাতি, নেই পরিষ্কার পানীয় জলের ব্যবস্থা, এমনকি নেই শিশুদের নিরাপত্তার জন্য কোনো বাউন্ডারি ওয়ালও।
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণ রাঙ্গুটিয়া ১ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সেই সময় থেকেই কেন্দ্রটি পরিচালনা করে আসছেন দিদিমনি সুকুন্তলা সরকার।
সুকুন্তলা দেবী দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এলাকার শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা, পুষ্টি ও যত্নের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন একনিষ্ঠভাবে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় — এত দীর্ঘ সময় পার হলেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি এখনও বঞ্চিত রয়েছে মৌলিক অবকাঠামোগত সুবিধা থেকে।
বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে দিনের পর দিন অন্ধকারে চলে শিশুদের পাঠদান, গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়ে শিশুরা, আর বৃষ্টির সময় জল ঢোকে ঘরের ভিতরে।
কেন্দ্রে নেই নিরাপত্তা দেওয়াল — ফলে গবাদি পশু থেকে শুরু করে অবাঞ্ছিত প্রবেশকারীদের কারণে প্রায়ই বিঘ্ন ঘটে দৈনন্দিন কার্যক্রমে।
পানীয় জলের অভাবে শিক্ষক ও শিশুদের ভরসা করতে হয় আশপাশের বাড়িঘরের উপর।
সুকুন্তলা দেবী জানিয়েছেন —
“আমি একাধিকবার গ্রামের প্রধানকে জানিয়েছি, জানিয়েছি সিডিপিও অফিসেও। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে, অথচ কেউ নজর দিচ্ছে না।”
প্রশ্ন উঠছে —
যেখানে সরকার ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, উন্নয়ন ও ‘বিকাশের’ নামে সভায় সভায় গলা ফাটাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা —
সেখানে শহর সংলগ্ন বামুটিয়া গ্রামীণ এলাকার এই বাস্তব চিত্র ঠিক কী বলছে?
দক্ষিণ রাঙ্গুটিয়া ১ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আজ যেন এক প্রতীক —
উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতার মধ্যে পার্থক্যের।
তবুও, দিদিমনি সুকুন্তলা সরকার আশা ছাড়েননি।
তিনি আজও প্রতিদিন ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে আসেন কেন্দ্রে, শেখান, খাওয়ান, আর অপেক্ষা করেন —
কবে এই কেন্দ্রেও জ্বলে উঠবে উন্নয়নের আলো।
এই প্রতিবেদন শুধু একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের গল্প নয়, বরং এটি প্রশাসনের উদাসীনতার এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি — যেখানে প্রতিশ্রুতির পাহাড় গড়ে উঠলেও, মাটিতে রয়ে গেছে অন্ধকার আর অবহেলার চিহ্ন।








