বেতাগা গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২৫ জন কৃষকের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রাকৃতিক কৃষি, জল সংরক্ষণ ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার বার্তা
শান্তির বাজার, ত্রিপুরা । ০৩ নভেম্বর ২০২৫ঃ আজ শান্তিরবাজার মহকুমার অন্তর্গত বকাফা ব্লকের বেতাগা গ্রাম পঞ্চায়েতে বগাফা কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে এক বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করা এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হওয়া। বেতাগা সাইনবোর্ড বাজার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন প্রায় ১২৫ জন কৃষক, যাদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের উপস্থিতি ছিল যথেষ্টই লক্ষণীয়।

রাজ্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে বগাফা কৃষি দপ্তর নিয়মিতভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আজকের এই কর্মশালায় কৃষকদের প্রাকৃতিক চাষাবাদের নানা দিক তুলে ধরা হয়। কৃষি দপ্তরের তত্ত্বাবধানে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে জলের ড্রাম, যা জল সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক সার তৈরিতে কাজে লাগবে বলে জানা গেছে।
উপস্থিত ছিলেন বগাফা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান কৃষ্ণা রিয়াং, আর কে গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অনিতা দেবনাথ, বেতাগা গ্রাম পঞ্চায়েতের চেয়ারম্যান নিপু সরকার, বকাফা কৃষি তত্ত্বাবধায়ক রাজিব সেন, অজয় সেন, বাবুল নমঃ সহ আরও অনেকে।
বগাফা কৃষি তত্ত্বাবধায়ক রাজীব সেন তাঁর বক্তব্যে বলেন,

“প্রাকৃতিক উপায়ে চাষাবাদ শুধু মাটির উর্বরতা রক্ষা করে না, বরং কৃষকের উৎপাদন খরচও কমায়। এতে জমি দীর্ঘদিন উর্বর থাকে এবং পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় থাকে।”
তিনি আরও জানান, প্রাকৃতিক উপায়ে চাষাবাদে আগ্রহী প্রতিটি কৃষককে আগামী দিনে আরও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রত্যেক কৃষক প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাবেন, যাতে তারা সহজে প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতিতে অগ্রসর হতে পারেন।
উল্লেখ্য, গতবছর আলু চাষে বিশেষ সাফল্য অর্জন করে বেতাগা এলাকার কৃষকরা। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই বগাফা ব্লকের মধ্যে প্রথমে বেতাগা গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান কৃষ্ণা রিয়াং জানান,

“বেতাগা এলাকার কৃষকরা পরিশ্রমী এবং নতুন উদ্যোগ গ্রহণে সর্বদা প্রস্তুত। তাঁদের এই উদ্যমকে আরও এগিয়ে নিতে প্রাকৃতিক কৃষির এই কর্মশালা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কৃষকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকরা জানান, প্রাকৃতিক চাষের মাধ্যমে তারা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি জমির উর্বরতা ধরে রাখতে পারবেন বলে আশা করছেন।
সব মিলিয়ে, বগাফা কৃষি দপ্তরের এই উদ্যোগ স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। প্রাকৃতিক উপায়ে চাষাবাদের এই দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতে সমগ্র রাজ্যের কৃষকদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।








