কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উন্নয়নমূলক রাস্তা নির্মাণে জনদুর্ভোগ: এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ
তেলিয়ামুড়া, ত্রিপুরা । ২৬ আগস্ট ২০২৫ঃ একদিকে রাজ্য সরকার যখন সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে নিরন্তর কাজ করে চলেছে বলে দাবি করছে, ঠিক সেই সময়েই কিছু কিছু এলাকা থেকে এমন কিছু চিত্র উঠে আসছে যা সরকারের এই দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে। কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জারুইলং বাড়ি এলাকাতেও ঠিক এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকছে সাধারণ মানুষ, যেখানে উন্নয়নই যেন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘটনার বিবরণ:
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক থেকে জারুইলং বাড়ি লোকনাথ মন্দির পর্যন্ত একটি রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এই রাস্তাটি নির্মাণের ফলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু, এই উন্নয়নই এখন এলাকাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কারো পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আবার কারো কৃষি জমিতে রাস্তার মাটি ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে। এমনকি, রাস্তার পাশে পাকা দেওয়াল নির্মাণের ফলে পার্শ্ববর্তী পুকুরের মাছ মরে যাওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও উঠেছে।
এলাকাবাসীর বক্তব্য:
এই ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, তারা উন্নয়নের বিরোধী নন। তারাও চান যে রাস্তাটি উন্নত মানের হোক এবং এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটুক। কিন্তু, সেই উন্নয়ন কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে হতে পারে না।
ক্ষতিগ্রস্ত এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা রাস্তা নির্মাণের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু, আমাদের পুকুর, আমাদের কৃষি জমি নষ্ট করে এই উন্নয়ন আমরা চাই না। আমরা চাই, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখুক এবং আমাদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাক।”
আরেকজন গ্রামবাসী বলেন, “রাস্তার কাজের জন্য আমাদের পুকুরের সব মাছ মরে গেছে। আমাদের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর দায় কে নেবে?”
উদ্বেগ ও প্রশ্ন:
এই ঘটনা একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে দিয়েছে:
- উন্নয়নের নামে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করার অধিকার কি কারো আছে?
- রাস্তা নির্মাণের সময় ঠিকাদারদের কি কোনো দায়বদ্ধতা নেই?
- প্রশাসনের কর্তারা কি এই সব দেখেও চুপ করে থাকবেন?
জারুইলং বাড়ি এলাকার ঘটনা প্রমাণ করে যে, উন্নয়নের পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতার অভাব রয়েছে। সরকারের উচিত, এই ধরনের ঘটনায় অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা এবং নিশ্চিত করা যে, উন্নয়নের নামে কোনো সাধারণ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদেরও উচিত, তাদের কাজের প্রতি আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া এবং সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় রেখে কাজ করা। এই উন্নয়ন সাধারণ মানুষের কাছে আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপ হয়েই থেকে যাবে।
উন্নয়নমূলক রাস্তায় জনদুর্ভোগ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী: উন্নয়নমূলক রাস্তায় জনদুর্ভোগ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী








