বাল্যবিবাহ রুখতে এবং নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তুলতে সচেতনতা কর্মসূচি বামুটিয়ায়, মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান: প্রতিদিন ক্লাসে হোক ১০ মিনিটের ‘ড্রাগস সচেতনতা’।
বামুটিয়া, ১৭ জুলাইঃ একটি সুস্থ, শিক্ষিত এবং সচেতন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বাল্যবিবাহ রোধ এবং মাদকমুক্ত ভারত নির্মাণের বার্তা নিয়ে আজ এক গুরুত্বপূর্ণ জেলা-ভিত্তিক সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয় পশ্চিম ত্রিপুরার বামুটিয়া অঞ্চলের গান্ধীগ্রাম স্কুল ময়দানে। রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক নেতৃত্ব এবং বিশিষ্ট জনদের উপস্থিতিতে এই কর্মসূচি হয়ে উঠেছে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ শীল, বামুটিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস, আগরতলার মাননীয় মেয়র দীপক মজুমদার, পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক, মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী ও বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকবৃন্দ।
এই সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা এক আবেগঘন ও বাস্তবনির্ভর বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন,
“মাদকদ্রব্য শুধু একজন মানুষ নয়, গোটা সমাজকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। তাই আমাদের সকলকে একজোট হয়ে এই অভিশাপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট করে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ড্রাগসের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করা উচিত। এই প্রয়াসই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।
অভিভাবকদের প্রতিও বিশেষ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনাদের সন্তানেরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে, কী করছে—এইসব বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। সন্তানদের প্রতি সচেতন অভিভাবকতাই পারে পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করতে।”
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, “বাল্যবিবাহ সামাজিক ব্যাধি। শিক্ষিত ও সচেতন সমাজেই এই কুপ্রথার অবসান সম্ভব। সরকার এই বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে, কিন্তু সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া তা সফল হবে না।”
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বহু ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও সংস্থা তথ্যপত্র, পুস্তিকা এবং মাইমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেন।
এই কর্মসূচি আয়োজনের মাধ্যমে ত্রিপুরা সরকার আবারও প্রমাণ করল—তারা শুধুমাত্র প্রশাসনিক দায়িত্বে সীমাবদ্ধ নয়, বরং একটি সুস্থ, নেশামুক্ত, ও ন্যায়বদ্ধ সমাজ গঠনে সত্যিকার অর্থে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।








