
গাড়ি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উত্তাল খোয়াই হাসপাতাল, সময়মতো না পৌঁছানোয় পুলিশের সমালোচনা।
খোয়াই, ত্রিপুরা , নিজস্ব প্রতিনিধিঃ খোয়াই জেলার প্রধান রেফারেল হাসপাতাল শুক্রবার গভীর রাতে পরিণত হয় উত্তেজনার কেন্দ্রস্থলে। একটি যান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে রাত প্রায় ১১টা নাগাদ হাসপাতাল চত্বর রণক্ষেত্রের রূপ ধারণ করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, খোয়াই জেলার সমতল পদ্মবিল এলাকার বাসিন্দা প্রকাশ দেববর্মা, পিতা মৃত মনোরঞ্জন দেববর্মা, একটি সামাজিক অনুষ্ঠান সেরে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে খোয়াইয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে হাত কাটা এলাকা অতিক্রম করার সময় তাঁর গাড়ি (নাম্বার TR02B0226) এক টমটমকে সজোরে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনাস্থল ছিল পদ্মবিল সংলগ্ন এলাকা। সংঘর্ষে টমটমের চালক এবং তার পেছনে থাকা এক বাইক আরোহী গুরুতর আহত হন। দ্রুত স্থানীয় এলাকাবাসীরা আহতদের উদ্ধার করে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জানা যায়, আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে তড়িঘড়ি করে জিবি পান্ত হাসপাতালে রেফার করা হয়। ঘটনার সূত্র ধরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরে। আহত ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজনেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং চালক প্রকাশ দেববর্মাকে প্রকাশ্যে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, কিছু লোক ইট হাতে নিয়ে চালককে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে উপস্থিত স্থানীয় মানুষজন ও হাসপাতালের বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের তৎপরতায় সংঘর্ষ আরও বড় আকার ধারণ করতে পারেনি। এদিকে, সুভাষ পার্ক ফাঁড়ি এবং খোয়াই থানা থেকে মাত্র কয়েকশো মিটার দূরত্বে এই ঘটনা ঘটলেও, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অনেকটাই সময় নিয়ে ফেলে। পুলিশের এমন ধীর পদক্ষেপকে ঘিরে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যদি নিরাপত্তার এইরকম হাল থাকে, তবে রাত্রিকালীন হাসপাতালের পরিবেশ কার জিম্মায় থাকবে?” উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, যদিও হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা দুইজন পুলিশ সদস্যকে দেখা গেছে, তাদের ভূমিকা ছিল কার্যত নিষ্ক্রিয়। এমন পরিস্থিতিতে বড়সড় অঘটন ঘটতে পারত, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ঘটনার পর গাড়ি চালক প্রকাশ দেববর্মাকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায় এবং তদন্ত শুরু হয়। তবুও, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হাসপাতালের রাত্রিকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পুলিশের প্রতিক্রিয়াশীলতা নিয়ে জনমনে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে জনস্বার্থে দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে মত বিশিষ্ট মহলের।