আইজিএম হাসপাতালের সামনে রিকশা চালকদের বিক্ষোভে তাণ্ডব, প্রশাসনের নীরবতায় প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
আগরতলা, ৫ জুন: বিএমএস আশ্রিত রিকশা শ্রমিক সংগঠনের ডাকে এক দাবিদাওয়াভিত্তিক আন্দোলন মঙ্গলবার দুপুরে রূপ নেয় চরম বিশৃঙ্খলার। আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানী আগরতলার ডিএম অফিসের সামনে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার জন্য রিকশা চালকদের একটি বড় অংশ জড়ো হয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা আইজিএম হাসপাতালের প্রধান প্রবেশপথ ও আশপাশের রাস্তাজুড়ে বিক্ষোভে লিপ্ত হয়ে পড়লে শুরু হয় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা।
এদিন হাসপাতালের সামনে আন্দোলনের নামে রিকশা চালকদের চিৎকার, হর্ন বাজানো, যান চলাচলে বাধা এবং রাস্তার একাংশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা চরম ভোগান্তিতে ফেলে সাধারণ মানুষকে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাসপাতালের রোগী ও তাদের পরিজনেরা। অনেকেই জানান, জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সময়মতো হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারেননি। অ্যাম্বুলেন্স আটকে যায়, বয়স্ক ও শয্যাশায়ী রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি হাসপাতালের কর্মীদেরও ভিতরে ঢুকতে সমস্যার মুখে পড়তে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা অভিযোগ করেন, আন্দোলনকারীদের আচরণ ছিল পুরোপুরি অশালীন ও বিশৃঙ্খল। কেউ কেউ রিকশা নিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকেন, কেউ উচ্চস্বরে স্লোগান দেন—যার ফলস্বরূপ সাধারণ পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আন্দোলন যেন অরাজকতায় পরিণত হয়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এই ঘটনাপ্রবাহ চলাকালীন পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। আইজিএম হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এবং সেখানকার অসুস্থ রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা জনমনে গভীর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। উপস্থিত সাধারণ মানুষ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে যদি পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা কোথায় যাবো? প্রশাসন কি কুম্ভনিদ্রায় আচ্ছন্ন?”
বিএমএস আশ্রিত রিকশা চালকদের দাবিগুলি হয়তো যুক্তিসঙ্গত, কিন্তু আন্দোলনের ধরন এবং জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে যেভাবে তা সংঘটিত করা হয়েছে, তা গণতান্ত্রিক অধিকার নয়, বরং নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ বলে মনে করছেন সমাজের সচেতন মহল।
প্রশাসনের তরফ থেকে এই ঘটনায় কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না থাকায় ক্ষোভ আরও গভীর হয়েছে। এখন এলাকাবাসীসহ সচেতন নাগরিকদের একটাই দাবি—সরকার যেন অবিলম্বে এমন জনজীবন ব্যাহতকারী কর্মকাণ্ড রুখে দেওয়ার জন্য উপযুক্ত বিধান গ্রহণ করে।