
খোয়াই, ২৪ মে: ধলাবিল জাতীয় সড়ক সংলগ্ন এলাকায় এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা সামনে এসেছে। শনিবার সকাল প্রায় দশটা নাগাদ জাতীয় সড়কের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এক অজ্ঞাত যুবককে দেখতে পান খোয়াই মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট সমাজসেবী অনিমেষ নাগ।
জানা যায়, অনিমেষ নাগ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলেন। পথে ধলাবিল সংলগ্ন জাতীয় সড়কে পৌঁছালে তার চোখে পড়ে এক যুবক রাস্তার ধারে মাটিতে পড়ে রয়েছেন, যার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে এবং তিনি নড়াচড়া করতেও অক্ষম। ঘটনার আকস্মিকতায় এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেলেও, দায়িত্ববোধ থেকে অনিমেষবাবু সঙ্গে সঙ্গেই নিজের গাড়ি থামিয়ে ছুটে যান আহত যুবকের কাছে।

তিনি কোনও প্রকার দেরি না করে তৎক্ষণাৎ ঐ যুবককে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান খোয়াই জেলা হাসপাতালে এবং সেখানেই যুবকের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত যুবকের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাত রয়েছে, তবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ফলে তার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
পরবর্তী সময়ে গোটা ঘটনার বিষয়ে বিএমএস (ভারতীয় মজদুর সংঘ) নেতৃত্ব সুমন ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, আহত যুবকের প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র কিনে দেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে তাকে বাড়িতে পাঠানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুমনবাবু আরও বলেন, “আমাদের সংগঠনের তরফ থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, একটি ইকো গাড়ি ওই যুবককে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। সেই গাড়ির হদিস বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছেন, জাতীয় সড়কগুলোতে পর্যাপ্ত নজরদারি ও ক্যামেরা ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনার সঠিক তদন্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। সড়কপথে নিয়মিত ট্রাফিক নজরদারি ও স্পিড মনিটরিং না থাকায় দুর্ঘটনার প্রবণতা বাড়ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন।
একইসঙ্গে সমাজসেবী অনিমেষ নাগের মানবিক উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অনেকেই। তার তাৎক্ষণিক সাহসী পদক্ষেপ না থাকলে ওই যুবকের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হত না বলেই মত চিকিৎসকদের।
এই ঘটনার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, অন্যদিকে অনিমেষ নাগের মত সমাজসেবীদের উপস্থিতি সমাজে মানবিকতার বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। আহত যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে এবং পুলিশ প্রশাসন ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
সাধারণ মানুষ এখন প্রশাসনের দিকেই তাকিয়ে, এই ধরণের ঘটনা বন্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন সকলে।