
খোয়াই, ২৪ মে: মানবিকতার সংকট দেখা দিলো খোয়াই জেলা হাসপাতালে। অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসে এক যুবক দুর্ব্যবহারের শিকার হলেন বলে অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ ঘটেছে।
জানা গেছে, খোয়াই জেলার দুর্গানগর এলাকার বাসিন্দা কমল কান্তি দেব তার স্ত্রী ও ছোট্ট সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে খোয়াই জেলা হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগে আসেন। তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে পৌঁছান। তবে অভিযোগ অনুযায়ী, হাসপাতালে ঢুকতেই তিনি চরম অবহেলা ও অমানবিক আচরণের মুখে পড়েন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী সমরেশ দেববর্মা ওই সময় সাফ জানিয়ে দেন যে, এখানে তার স্ত্রীর চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। এমনকি চিকিৎসা না করার সুনির্দিষ্ট কারণও পরিষ্কারভাবে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। আশেপাশে উপস্থিত অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরাও বিষয়টি নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেন। কেউ কোনো সহানুভূতি বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী।
ঘটনার পর হতাশ এবং ক্ষুব্ধ যুবক কমল কান্তি দেব পুরো বিষয়টি বিস্তারিতভাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, আমি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু ইমারজেন্সি বিভাগে গিয়ে দেখি চিকিৎসা তো দূরের কথা, আমার সঙ্গে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করা হয়। আমি একা, সঙ্গে ছোট বাচ্চা, আমি কী করবো বুঝতে পারিনি।”
এই ঘটনা সামনে আসতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, খোয়াই জেলা হাসপাতালে এমন আচরণ নতুন কিছু নয়। বহুবার অভিযোগ উঠেছে, জরুরি বিভাগে সঠিক পরিষেবা মেলে না, রোগীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়।
ঘটনাটি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জনসাধারণের দাবি, এই ধরনের আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং দোষী স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এই ঘটনা প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মানবিক দিক নিয়ে। একদিকে যেখানে সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নের কথা বলছে, অন্যদিকে বাস্তবে সাধারণ মানুষের কষ্ট যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কমল কান্তি দেবের মতো আরও অনেক সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত এই ধরনের অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এই অসহায় পরিস্থিতির অবসান হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকেরা।