হেলমেট যেন কেবল পুলিশের ভয়ে নয়, নিজের সুরক্ষার জন্য—চালকদের ফিতা পরিয়ে বুঝিয়ে দিলেন ওসি রাজু দত্ত; ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি।
জোলাইবাড়ি, ত্রিপুরা । ২৬ নভেম্বর ২০২৫ঃ শীতের আমেজ শুরু হতেই রাজ্যজুড়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে বা শীতের রাতে ফাঁকা রাস্তায় বেপরোয়া গতির জেরে প্রতিদিনই ঝরছে তাজা প্রাণ। কখনো দ্রুত গতি, কখনো মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, আবার কখনো ট্রাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাতায়াত—দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বারবার উঠে আসছে চালকদের এই অসচেতনতাই। বিশেষ করে বাইক চালকদের হেলমেট না পরা বা ভুল পদ্ধতিতে হেলমেট পরার কারণে সামান্য দুর্ঘটনাতেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এবং দুর্ঘটনা এড়াতে কোমর বেঁধে নামল শান্তির বাজার থানার পুলিশ।
সড়ক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং চালকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাতে শান্তির বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বিশেষ অভিযানে নামে পুলিশ। এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন শান্তির বাজার থানার ওসি রাজু দত্ত এবং এসআই সমীর বিশ্বাস।
পুলিশের এই বিশেষ অভিযানে উঠে আসে এক বাস্তব চিত্র। দেখা যায়, বহু বাইক চালক কেবল পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে এবং জরিমানার ভয়ে মাথায় নামমাত্র হেলমেট চাপিয়ে রেখেছেন। কিন্তু হেলমেটটি মাথায় থাকলেও, তার সেফটি স্ট্র্যাপ বা ফিতা খোলা থাকছে। পুলিশ আধিকারিকরা জানান, দুর্ঘটনার সময় এই খোলা হেলমেট মাথা থেকে ছিটকে পড়ে যায়, ফলে চালকের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এদিন রাতে ওসি রাজু দত্ত নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বাইক চালকদের থামিয়ে তাদের ভুল শুধরে দেন। তিনি চালকদের বুঝিয়ে বলেন, “পুলিশের ভয়ে নয়, হেলমেট পরুন নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে। বাড়িতে আপনার জন্য আপনার আত্মীয়-পরিজন অপেক্ষা করছেন।” তিনি নিজ হাতে অনেক চালকের হেলমেটের ফিতা লাগিয়ে দেন এবং সঠিকভাবে হেলমেট পরিধানের পরামর্শ দেন।
শুধু দু-চাকার যান নয়, চার চাকার গাড়ি চালকদেরও সিটবেল্ট বাঁধার পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করা এবং মদ্যপ অবস্থায় স্টিয়ারিং না ধরার জন্য কড়া নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
অভিযান শেষে ওসি রাজু দত্ত সংবাদমাধ্যমকে জানান, মানুষকে সচেতন করাই পুলিশের মূল লক্ষ্য। তবে বারংবার বোঝানোর পরেও যারা ট্রাফিক আইন অমান্য করে বেপরোয়াভাবে যান চালাবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আগামীদিনেও শান্তির বাজার এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে এই ধরণের পুলিশি অভিযান ও নাকা চেকিং নিয়মিত জারি থাকবে বলে জানান তিনি।








