গবেষক, অধ্যাপক, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হলো সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক কর্মসূচি; বক্তৃতা, গান, প্রত্নস্থল পরিদর্শনসহ ছিল নানান আয়োজন।
রিপোর্ট- বাহাদুর ত্রিপুরাঃ ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব এবং প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি বিভাগ বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ (World Heritage Week) উপলক্ষে ঐতিহাসিক পিলাক প্রত্নস্থলে এক বর্ণাঢ্য ও জ্ঞানবর্ধক কর্মসূচির আয়োজন করে। এদিনের অনুষ্ঠানে গবেষক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় আড়াইশো জন ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতিতে পিলাক পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত শিক্ষামূলক মিলনমেলায়।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ভক্তি ও আবেগঘন পরিবেশে, দেশাত্মবোধক গান ‘বন্দে মাতরম’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। এরপর মঞ্চে এসে বিভাগের প্রধান অধ্যাপিকা জ্যোৎস্না রানী খুন্দ্রাকপাম বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহের তাৎপর্য, উদ্ভব, এবং বৈশ্বিকভাবে ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তৃত ধারণা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা প্রত্নতাত্ত্বিক চর্চাকে আরও বাস্তবমুখী করে তোলে এবং ঐতিহ্যের প্রতি সংবেদনশীল করে।
পরবর্তী পর্যায়ে বিভাগের অধ্যাপক ড. পলাশ কুমার সাহা পিলাক প্রত্নস্থলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ত্রিপুরার প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী, শিলালিপি, প্রত্নবস্তু এবং সেই সময়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। তাঁর বক্তব্য শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম পিলাক হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার দাস। তিনি স্কুলের তরুণ ছাত্রছাত্রীদের এই ধরনের প্রত্ন-পর্যটন ও ঐতিহ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক কার্যক্রমে যুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পরিশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিভাগের গবেষক সুব্রত নন্দী। তিনি উপস্থিত সকল অতিথি, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী ও পিলাক এলাকার প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে পশ্চিম পিলাক হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আলাদা আলাদা দলে বিভক্ত করে পিলাক প্রত্নস্থলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন করানো হয়। বিভাগীয় অধ্যাপক ও গবেষকরা প্রতিটি স্থানের ঐতিহাসিক পটভূমি, খননকার্য, পাওয়া নিদর্শন এবং তার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।
সমগ্র অনুষ্ঠানজুড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐতিহ্য সম্পর্কে গভীর আগ্রহ, শিখতে চাওয়ার উৎসাহ এবং প্রত্নতত্ত্বের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সঞ্চার লক্ষ্য করা যায়। বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ উপলক্ষে পিলাক প্রত্নস্থলে এই উদ্যোগ ত্রিপুরার ঐতিহ্য সম্বন্ধে নবপ্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।








