কল্যাণপুর থানা এলাকার মানিক চন্দ্র পাড়ার ঘটনা; প্রশাসনের নাকের ডগায় চলা অবৈধ কোয়ারির প্রাণঘাতী পরিবেশ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন!
অত্যন্ত শোকাবহ এবং হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ দিয়ে আমরা শুরু করছি।
আজ বেলা আনুমানিক এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে এক মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেল গোটা কল্যাণপুর এলাকা। স্থানীয় প্রশাসন এবং জনসাধারণের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। কল্যাণপুর থানা এলাকার অন্তর্গত মানিক চন্দ্র পাড়া, যা চন্দ্রপাড়া নামেও পরিচিত, সেই গ্রামের তিনটি কচি ছেলে খেলতে গিয়েছিল দুটি অবৈধ বালুর কোয়ারির মধ্যবর্তী স্থানে।
গ্রামের সাধারণ মানুষজন জানাচ্ছেন, এই স্থানটি দীর্ঘদিন ধরেই বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল, যেখানে বেআইনিভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছিল। খেলতে গিয়ে সেই বিপজ্জনক পরিবেশের শিকার হল তিনটি শিশু। আচমকাই সেই স্থানে বালির স্তূপে বড়সড় ধস নামে এবং তিন শিশুর মধ্যে দুইজন বালুর নিচে চাপা পড়ে যায়।
খবর পেয়ে দ্রুত স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উদ্ধারকাজ শুরু করেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলেই চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গেল মানিক চন্দ্রপাড়ার বাসিন্দা, ৭ বছর বয়সী আয়ুশ দেববর্মা (পিতা: শ্রী মদন দেববর্মা) এবং মাত্র ৫ বছর বয়সী রূমাই দেববর্মার (পিতা: শ্রী রাজু দেববর্মা) প্রাণ। বালির নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তারা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
Read more: অবৈধ বালু খাদানে চাপা পড়ে দুই শিশুর অকালমৃত্যু;আহত এক।তবে, সৌভাগ্যক্রমে, তাদের সঙ্গে থাকা অপর এক শিশু, ৭ বছর বয়সী রাং চাক দেববর্মা (পিতা: শ্রী রাজু দেববর্মা), দুর্ঘটনার কবল থেকে আংশিকভাবে রক্ষা পেলেও সে গুরুতরভাবে আহত হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত কল্যাণপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর, সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাং চাক দেববর্মার আশঙ্কাজনক শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে দ্রুত তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য খোয়াই জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেন।
দুই শিশুর এই মর্মান্তিক অকালমৃত্যুর পর গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই ঘটনা কেবলমাত্র একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং স্থানীয় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলতে থাকা অবৈধ বালু উত্তোলন এবং কোয়ারি পরিচালনাকারীদের চরম উদাসীনতার ফল বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। দুটি অবৈধ কোয়ারির মাঝে এমন প্রাণঘাতী পরিবেশ তৈরির জন্য দায় কার এবং প্রশাসনের ভূমিকা কী ছিল, সেই গুরুতর প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে।








