উদ্ধার হওয়া গাঁজার আনুমানিক কালোবাজারি মূল্য সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা; ধৃতদের বিরুদ্ধে এনডিপিএস আইনে মামলা। ধৃতদের একজন মথা দলের সক্রিয় নেতা হওয়ায় জল্পনা তুঙ্গে।
তেলিয়ামুড়া, ত্রিপুরা । রিপোর্ট-মৃন্ময় রায়ঃ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত বিশেষ অভিযানে ফের বড় সাফল্য অর্জন করল তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে ত্রিশাবাড়ি রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে দুই ব্যক্তিকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ গাঁজা পরিবহনের সময় হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, ধৃতদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৭ কেজি ৯০০ গ্রাম গাঁজা, যার আনুমানিক কালোবাজারি মূল্য সাড়ে তিন লক্ষাধিক টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটক দুই যুবকের নাম শ্যামল দেববর্মা এবং সন্তোষ দেববর্মা। তাদের মধ্যে শ্যামলের বাড়ি রাধাপুর থানা এলাকায়, এবং সন্তোষের বাড়ি মান্দাই এলাকায় বলে জানা গেছে। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে—গাঁজা উদ্ধারসহ দুই যুবককে আটক করার পর তাদের বিরুদ্ধে এনডিপিএস অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা গ্রহণ করে আইনের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ত্রিশাবাড়ি রেলস্টেশন এলাকায় গত কয়েক মাসে একাধিকবার গাঁজা ও অন্যান্য বেআইনি নেশাজাত সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে—রেলস্টেশন ও আশপাশের এলাকায় জিআরপি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। নিয়মিত নেশা ব্যবসার রুটে পরিণত হওয়া এই অঞ্চল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়ছে।
তবে এই ঘটনার সবচেয়ে আলোচিত অংশ হলো ধৃতদের একজন—সন্তোষ দেববর্মা—মথা দলের একজন সক্রিয় নেতা। সূত্র জানাচ্ছে, সন্তোষ দেববর্মার সঙ্গে মথা দলের শীর্ষ নেতা প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ব্যাপারে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এমনকি সন্তোষ মথা দলের এমডিসি গণেশ দেববর্মার ছত্রছায়ায় প্রতিপালিত বলেও দাবি উঠেছে।

প্রদ্যুৎ কিশোর যিনি সবসময় জাতির ভবিষ্যৎ, সমাজের উন্নয়ন এবং সভ্যতার পথে হাঁটার কথা বলে বড় বড় মন্তব্য করে থাকেন—তার ঘনিষ্ঠ দলের একজন নেতা যখন গাঁজাসহ পুলিশের জালে ধরা পড়েন, তখন এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রদ্যুৎ কিশোর কি অবস্থান নেন, কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন—তা এখন দেখার বিষয়।
আইন অমান্যকারী ও নেশা চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের এই অভিযান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেআইনি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কতদূর বিস্তৃত—সেই প্রশ্নও আবারও সামনে উঠে এসেছে।








