ধর্মনগর যাওয়ার পথে আমবাসা চৌমুহনীতে দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়েন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। প্রশাসনিক আধিকারিকদের দিকে আঙ্গুল তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ। “হামলার দিন কোথায় ছিলেন?”— প্রশ্ন তুলে পুলিশের উপর ফের ক্ষিপ্ত নেত্রী।
আমবাসা (ত্রিপুরা) । ২৫ অক্টোবর ২০২৫ : ত্রিপুরার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফের উত্তাপ ছড়ালো। আজ (সময় উল্লেখ করা যেতে পারে) প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিককে ধর্মনগর যাওয়ার পথে আমবাসা চৌমুহনীর নিকটবর্তী স্থানে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়। এই অপ্রত্যাশিত বাধাদানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে, যেখানে নেত্রী সরাসরি প্রশাসনিক আধিকারিক ও কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ব্যারিকেড নিয়ে কড়া প্রশ্ন:
আমবাসা চৌমুহনীর প্রবেশপথে ব্যারিকেড ফেলে তাঁর কনভয় আটকে দেওয়া হলে প্রতিমা ভৌমিক কার্যত অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে এসে সরাসরি পুলিশ কর্মীদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন। তীব্র আক্রমণের সুরে তিনি প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “সেদিন যখন আক্রমণকারীরা হামলা চালাচ্ছিল, নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার হচ্ছিল, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? সেই সঙ্কটকালীন মুহূর্তে তো প্রশাসনিক সহায়তা দেখা যায়নি।” তাঁর এই মন্তব্যে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন।
‘এখন কেন বেরিকেট?’:
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রশাসনিক ব্যবস্থার দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রকৃত প্রয়োজন ছিল, তখন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর এখন কেন এই অতিরিক্ত বেরিকেট দিয়ে সাধারণ মানুষের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে? কার নির্দেশে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে?”
পুনরায় উত্তেজনা এবং অভিযোগ:
পুলিশ কর্মীদের সাথে বাদানুবাদের মধ্যেই নেত্রী আবারও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁর কণ্ঠে চরম বিরক্তি ও ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। প্রতিমা ভৌমিক গুরুতর অভিযোগ করেন যে, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মথার দলের (টিপরা মথা) আন্দোলনকারীরা লাগাতারভাবে বাঙালি পরিচয় দিয়ে নিরীহ মানুষদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “এই রাজ্যে এখন প্রকাশ্যে ‘বাঙালি’ বলে টার্গেট করে মারধর করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসন এই বিষয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।” তিনি দাবি করেন, এই ধরনের হামলার প্রতিবাদ জানাতে এবং আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতেই তিনি ধর্মনগরের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন, কিন্তু সরকার তাঁকে আটকাতে চাইছে।
প্রতিমা ভৌমিকের এই প্রতিবাদী অবস্থান দীর্ঘক্ষণ ধরে আমবাসা চৌমুহনীতে এক টানটান পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নেত্রীর সাথে কথা বলেন। দীর্ঘ বাক-বিতণ্ডার পর অবশেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং প্রতিমা ভৌমিক তাঁর গন্তব্যের দিকে যাত্রা শুরু করেন। তবে ঘটনাটি ত্রিপুরায় বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করল।








