রামনগরে সাংবাদিকের উপর চাঞ্চল্যকর হামলা! অভিযুক্ত অটোচালকের রাজনৈতিক দাপট, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন।
রামনগর, আগরতলা । ১৭ অক্টোবর ২০২৫ঃ শান্তিপূর্ণ রামনগর এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটে গেল এক রক্তচক্ষু মুঠে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সংবাদমাধ্যম Vnews Bangla-র সম্মানিত সম্পাদক অর্ঘজ্যোতি দত্ত ও তাঁর স্ত্রীকে লক্ষ্য করে চালানো হয় নৃশংস হামলা। অভিযোগের তীর এক ই–অটো চালক ও তার দলবলের দিকে।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের সময়। দুর্গা চৌমুহনী থেকে বড় জেলা অভিমুখে যাচ্ছিলেন অর্ঘজ্যোতি দত্ত, তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি চালিয়ে। মাঝরাস্তায় একটি ই–অটো (নম্বর: TR01L–4337) রাস্তার ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল। ওই অটো চলন্ত ট্রাফিকে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল। গাড়ি থেকে হর্ন দেওয়ায়, অটোচালক আচমকা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে।
অর্ঘজ্যোতি দত্ত প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং গাড়ি নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যান। কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি ঘটনা। কিছুদূর যাওয়ার পর, আলবার্ট ক্লাবের সামনে ওই একই ই–অটো চালক ৪–৫ জন সহযোগী নিয়ে অর্ঘজ্যোতির গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে।
অভিযুক্তরা শুধু পাথর নিক্ষেপেই থেমে থাকেনি। তারা গাড়ির দরজা খুলে জোরপূর্বক ভিতরে প্রবেশ করে, গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, এবং এরপর শুরু হয় শারীরিক আক্রমণ। সাংবাদিক অর্ঘজ্যোতি দত্ত ও তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়।
তাঁর স্ত্রীর সামনেই তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় এবং একাধিকবার ধাক্কা মারা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় অর্ঘজ্যোতি দত্ত অভিযুক্তকে বোঝানোর চেষ্টা করলে, উত্তরে ওই ব্যক্তি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়—
“আমি শাসকদলের একনিষ্ঠ কর্মী। মুখ্যমন্ত্রীর খুব কাছের লোক আমি। আমাকে কেউ কিছু করতে পারবে না, পুলিশও না।”
এই ভয়ঙ্কর হুমকির পর, কোনো মতে নিজে ও স্ত্রীকে বাঁচিয়ে রামনগর থানায় পৌঁছান অর্ঘজ্যোতি দত্ত এবং ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রশ্নে পুলিশ প্রশাসন:
এই ঘটনার পর, এলাকায় ছড়িয়েছে তীব্র উত্তেজনা। এক সাধারণ ই–অটো চালকের এমন দম্ভ এবং প্রকাশ্যে রাজনৈতিক পরিচয় দেখিয়ে হুমকি, নিঃসন্দেহে আইনের শাসনের উপর এক বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে।
এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া:
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত অটোচালক দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলাফেরা করেন। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও এমন অসদাচরণ ও মারমুখী আচরণের অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বারবার রক্ষা পেয়ে গেছেন।
এখন দেখার বিষয়, পুলিশ প্রশাসন কতটা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়। একজন সাংবাদিক, যাঁর কাজ সত্যকে সামনে আনা— যদি এমন দুষ্কৃতির শিকার হন, তবে সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা কোথায়?








