রাতের আঁধারে ধাওয়া, ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে হামলা—চোখের সামনে ভাঙচুর, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পরিবার; ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন।
খোয়াই, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫: রবিবার গভীর রাতে খোয়াই জেলার উত্তর চেবরিতে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা দেবজিৎ দেবনাথ ও তার পরিবারের উপর রাতে পরিকল্পিতভাবে হামলার অভিযোগ ঘিরে থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়েছে এলাকাজুড়ে। ঘটনায় শুধু যে শারীরিক বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তাই নয়, পুরো পরিবার ভুগছে তীব্র মানসিক আতঙ্কে।

ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ। দেবজিৎ দেবনাথ প্রতিদিনের মতোই তার উপার্জনের মাধ্যম—একটি যাত্রীবাহী গাড়ি—চালিয়ে দিনশেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। গাড়িটি বাড়ির পাশেই পার্ক করে তিনি যখন নিজের বাসস্থানের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখন হঠাৎই একদল দুষ্কৃতী তার দিকে তেড়ে আসে। তারা তাকে ধাওয়া করতে শুরু করে, বলে অভিযোগ।
সেই ভয়ংকর মুহূর্তের বর্ণনায় কাঁপতে কাঁপতে সংবাদ মাধ্যমের সামনে দেবজিৎ বলেন, “এক মুহূর্তে কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। শুধু দেখলাম কয়েকজন লোক আমার দিকে দৌড়ে আসছে। প্রাণে বাঁচার তাগিদে আমি দৌড়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিই।”
এই ঘটনার পরও থেমে থাকেনি হামলাকারীরা। দেবজিতকে না পেয়ে, তাদের রাগ গিয়ে পড়ে তার বাড়ির উপর। পরিবারের অভিযোগ, এরপরই শুরু হয় ঘরের দরজা-জানালায় ভাঙচুর। ঘটনার সময় দেবজিতের মা ঘরের ভেতরেই ছিলেন এবং চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এই দৃশ্য আজও আতঙ্কের ছায়া ফেলেছে তার মনে।
তিনি জানান, “আমার ছেলেকে মেরে ফেলতে এসেছিল ওরা। ও দরজা বন্ধ করে বেঁচে গেল, কিন্তু ওরা বাইরে থেকে দরজা ধাক্কাতে থাকে। আমরা চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে দেয়, গেটে লাথি মারে।”
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার পরপরই তারা খোয়াই থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত দোষীদের চিহ্নিত করে কোনো দৃশ্যমান পুলিশি পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলেই অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ঘটনাটি নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে—একটি পরিবার এভাবে আক্রান্ত হওয়ার পরেও যদি অপরাধীরা দিব্যি ঘুরে বেড়াতে পারে, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? আদৌ ঘটনার পেছনে কোনো পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা।
স্থানীয়ভাবে কেউ কেউ একে ব্যক্তিগত রেষারেষি হিসেবে দেখলেও, পরিবার ও প্রতিবেশীদের মতে, হামলাকারীদের আচরণ ছিল অত্যন্ত ‘টার্গেটেড’।
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, “আজ দেবজিৎ, কাল হয়তো অন্য কেউ—এভাবে কি চলতেই থাকবে? প্রশাসন কি শুধুই কাগজে-কলমে?”
এখন দেখার বিষয়, পুলিশের তদন্তে আদৌ প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ্যে আসে কিনা, এবং পরিবারটি ন্যায়বিচার পায় কিনা।








