শারদ উৎসবকে কেন্দ্র করে সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়াতে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে গড়ে উঠল সচেতনতা, উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা প্রদেশের নেতৃত্বসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
সিপাহীজলা, ২৭ সেপ্টেম্বর: শারদ উৎসবের প্রাক্কালে যখন রাজ্যজুড়ে দুর্গা পূজার প্রস্তুতিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে, ঠিক তখনই এক ব্যতিক্রমী এবং সচেতন উদ্যোগ নিয়েছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (ABVP)-এর সিপাহীজলা জেলার অন্তর্গত নলছড় নগর শাখা।

“মায়ের আগমনী” নামক এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হল এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা —
👉🏽 “ধর্ম যার যার, দুর্গা পূজা সবার”।
এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, সামাজিক সহাবস্থানের বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং দুর্গাপূজাকে শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উৎসবের মিলনমেলা হিসেবে তুলে ধরা।
এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:
- ত্রিপুরা প্রদেশ ABVP-এর SWC সদস্য শুভজিৎ রায়,
- নলছড় নগর শাখার সহ-সভাপতি দিপক দেবনাথ,
- সম্পাদক বিলটন দেবনাথ,
- এবং নলছড় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাশয়।
তাঁরা প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্যে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে এই বার্তাই তুলে ধরেন যে — দুর্গাপূজা কেবলমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নয়, বরং এটি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষকে একত্রিত করার এক সেতুবন্ধন।
শুভজিৎ রায় তাঁর বক্তব্যে বলেন,
“আমরা চাই এই প্রজন্ম জানুক, পূজা মানে শুধু ধর্মীয় রীতি নয়, এটি একসঙ্গে বাঁচার এবং সংস্কৃতির বন্ধনকে মজবুত করার উৎসব। সমাজে সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি করাই আজকের লক্ষ্য।”
দীপক দেবনাথ ও বিলটন দেবনাথ জানান,
“ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যদি ছোট থেকেই এই মানসিকতা গড়ে তোলা যায় যে উৎসব সকলের, তবে ভবিষ্যতের সমাজ আরও মানবিক ও একতাবদ্ধ হবে।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয়ও এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন,
“বিদ্যালয় চত্বরে এরকম সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান ছাত্রদের মননে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমরা চাই এমন কর্মসূচি বারবার হোক।”
অনুষ্ঠান চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের হাতে ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড ছিল, যেখানে লেখা ছিল –
“শারদীয়া দূর্গোৎসব মানে মিলনের উৎসব”,
“আমরা সবাই এক, উৎসবও সবার”,
এবং
“বিভাজনের নয়, একতার পূজা”।
এই ধরনের বার্তা সাধারণ মানুষের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই ছোট্ট কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচি সমাজে এক বড় বার্তা পৌঁছে দেয় –
যে কোনো ধর্মীয় উৎসব ভেদাভেদ নয়, বরং সম্প্রীতির সেতু হতে পারে।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ, নলছড় নগর শাখার এই ধরনের সমাজসচেতন কর্মসূচি ভবিষ্যতের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
“মায়ের আগমনী”-র এই উদ্যোগ প্রমাণ করে দেয়,
👉🏽 “উৎসবের আসল আনন্দ তখনই, যখন তা সবাই মিলে উদযাপন করা যায়।”
ত্রিপুরার মতো সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ রাজ্যে এই ধরনের কর্মকাণ্ড সমাজে সম্প্রীতির বীজ বপন করে এবং নতুন প্রজন্মকে শেখায় —
“একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধই আমাদের প্রকৃত শক্তি।”








