রক্ষাবন্ধনে শিক্ষা আর সম্পর্কের অপূর্ব মেলবন্ধন, পটনার শ্রীকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হল জুড়ে খান স্যারের জন্য ভালোবাসার ঢল.
পটনা প্রতিনিধিঃ এই বছরও শিক্ষা আর সম্পর্কের এক অনন্য সংমিশ্রণ নিয়ে দেশবাসীর মন ছুঁয়ে গেলেন দেশের অন্যতম প্রিয় শিক্ষক, খান স্যার। রক্ষাবন্ধনের দিন পটনার শ্রীকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হলে দেখা গেল হৃদয়গ্রাহী এক দৃশ্য— ১৫ হাজারেরও বেশি ছাত্রী, যাঁরা তাঁকে শুধুমাত্র শিক্ষক নয়, বড় ভাই হিসেবেও দেখেন, তাঁকে রাখি পরাতে এসেছেন।
আগে এই অনুষ্ঠানটি খান স্যারের কোচিং সেন্টারে সীমাবদ্ধ থাকলেও, এবছর ছাত্রীদের বিপুল উপস্থিতির কথা মাথায় রেখে একটি বড় হল বুক করা হয়। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় রাখি পরানোর পর্ব, যা চলে দুপুর ১:৩০ পর্যন্ত। এই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজার হাজার রাখিতে ভরে যায় খান স্যারের দুই হাত। এমনকি এক সময় তিনি নিজেই মাইকে বলে উঠলেন—
🗣️ “ডাক্তার ডাকো, হাতের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে!”
যেখানে রক্ষাবন্ধন সাধারণত পারিবারিক পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকে, সেখানে খান স্যার প্রতিবছর এই উৎসবকে পরিণত করেছেন এক সামাজিক আন্দোলনে। বোনের স্নেহ আর ভাইয়ের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি এখানে রূপ পায় শিক্ষা, মর্যাদা ও দায়িত্ববোধের বন্ধনে। ছাত্রীদের অনেকেই বলেছেন,
🗣️ “খান স্যার আমাদের শিক্ষক নন, তিনি আমাদের ভাই। তাঁর ক্লাসে আমরা নিরাপদ, সম্মানিত এবং শিক্ষিত বোধ করি।”
শুধু রাখি নয়, প্রতিটি বোনের মুখে হাসি ফুটাতে খান স্যার নিজ উদ্যোগে ১৫৬ ধরনের খাদ্যপদার্থের ব্যবস্থা করেন। রাখি পরানোর পর ছাত্রীরা যেন উৎসবের স্বাদ উপভোগ করতে পারে, সেই বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেন।
অনেক ছাত্রীর কাছেই রক্ষাবন্ধনের এই দিনটি শুধু আবেগের নয়, আশীর্বাদেরও দিন। কারণ খান স্যার এদিন তাঁদের জন্য বিশেষ কোর্সে ছাড়ের ঘোষণা দেন।
🗣️ “ছাত্রীরাই আমার শক্তি। ওরা যখন ভালোবেসে রাখি পরায়, তখন আমি শুধু শিক্ষক নই, আমি একজন ভাই হয়ে উঠি। ওদের জন্য কিছু করতে পারাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় উপহার,” বললেন খান স্যার।
হলজুড়ে হাজার হাজার ছাত্রীর মুখে ছিল উচ্ছ্বাস, হাতে ছিল রাখি, আর চোখে ছিল বিশ্বাস— তাঁদের এই ‘ভাই’ সারা দেশের জন্য এক অনুপ্রেরণা।
শিক্ষা যদি শুধু পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ না থেকে মানবিকতা, শ্রদ্ধা ও সম্পর্কের উপর দাঁড়ায়— তবে তারই প্রতিচ্ছবি খান স্যারের রক্ষাবন্ধন উদযাপন। যেখানে শিক্ষক হয়ে ওঠেন ভাই, আর ছাত্রী হয়ে ওঠে পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এইভাবে প্রতিবারই খান স্যার বুঝিয়ে দেন— শিক্ষা শুধু চাকরি পাওয়ার উপায় নয়, এটি সম্পর্ক গড়ারও সেতুবন্ধন।








