রোহিঙ্গা পাচারকারীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ কইয়া ডেপা! থানায় অভিযোগ করেও মিলছে না বিচার।
বিশালগড়, ত্রিপুরা । ৭ আগস্ট । রিপোর্ট- বাহাদুর ত্রিপুরাঃ ত্রিপুরার বিশালগড় মহকুমার অন্তর্গত মধুপুর থানাধীন কইয়া ডেপা এলাকায় চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কারণ, রোহিঙ্গা পাচার কাণ্ডে জড়িত সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন তারা। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর ধরে এই এলাকায় গোপনে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ ও আশ্রয়ের অভিযোগ থাকলেও, স্থানীয় থানায় একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার, এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে একাধিক পরিবারের প্রতিনিধিত্বে ক্ষতিগ্রস্তরা হাজির হন বিশালগড় মহকুমা পুলিশ প্রধান দুলাল দত্তের কাছে। তারা অভিযোগ করেন, কইয়া ডেপা এলাকায় রোহিঙ্গা পাচারকারী চক্র কিছু দুষ্কৃতিকে সামনে রেখে একাধিক গোপন আশ্রয়স্থল তৈরি করেছে। এই সমাজদ্রোহীরা দিনের পর দিন এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে চলেছে।
শুধু গোপন আশ্রয় গড়েই ক্ষান্ত নয়, ওই সমাজবিরোধীরা সাধারণ মানুষদের বাড়িঘরে হামলা, গালিগালাজ, ভয় দেখানো, এমনকি ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র (বন্দুক) নিয়ে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বেশ কিছু পরিবার অভিযোগ করেছে, সমাজদ্রোহীদের এই নির্লজ্জ দাপটে তারা পরিবার নিয়ে নিরাপদে বসবাস করতে পারছেন না।
প্রতিবাদ করলে বা বাধা দিতে গেলেই রাতের অন্ধকারে হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর, এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। অথচ, বারবার অভিযোগ জানানোর পরও মধুপুর থানার ভূমিকা কার্যত নীরব দর্শকের মতো। থানায় বারবার আবেদন, লিখিত অভিযোগ, মৌখিক অনুরোধ করেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান বাসিন্দারা।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বর্তমানে ওই অঞ্চলের কিছু পরিবার এতটাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে যে তারা নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন। এদিন মহকুমা পুলিশ প্রধানের কাছে পৌঁছে স্থানীয়রা বলেন, “যদি এবারও প্রশাসন পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে আমাদের প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হবে।”
মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দুলাল দত্ত এ বিষয়ে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, এখন সেটাই দেখার। তবে কইয়া ডেপা এলাকার সাধারণ মানুষের এই বিক্ষোভ এবং প্রতিরোধ প্রশাসনের প্রতি এক বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে — অবৈধ অনুপ্রবেশ, রোহিঙ্গা পাচার ও সমাজদ্রোহীদের দাপটে যখন গোটা এলাকা সন্ত্রস্ত, তখন প্রশাসনের নীরবতা কি ইচ্ছাকৃত? নাকি কোনো প্রভাবশালী শক্তির চাপে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারছে না? এখন দেখার, পুলিশের উচ্চপদস্থ মহলের হস্তক্ষেপে এই সমস্যার কোন কার্যকর সমাধান হয় কিনা।








