“মানুষ কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলেই রাহুলের রাগ”: রবি শঙ্কর প্রসাদর তীব্র আক্রমণ।
নতুন দিল্লি, ৭ আগস্ট । নিউজ ডেস্ক : ভারতের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী-র নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোলা ভোট চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে দিল্লির রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী দাবি করেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটকের একটি কেন্দ্রের ভোটার ডেটা বিশ্লেষণ করে তিনি দেখেছেন, নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করে সেখানে নির্বাচনী ফলাফল বিকৃত করেছে।

এই মন্তব্যের জবাবে শাসক দল বিজেপি রাহুল গান্ধীকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এবং ‘নির্লজ্জ’ বলে আক্রমণ করেছে। দলের তরফে প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন,
“রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্য শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়, দেশের জনগণের অপমান। যাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নমূলক কাজের ওপর ভরসা করে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের এইভাবে অপমান করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
#congress_rahul_gandhi
রাহুল গান্ধীর দাবি, শুধু একটি কেন্দ্রেই নয়, সারা দেশজুড়ে নির্বাচন কমিশন ও ক্ষমতাসীন বিজেপি মিলে ভোটার তালিকা ও ফলাফল নিয়ে ‘গভীর জালিয়াতি’ (Criminal Fraud) করেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতৃত্ব রাহুল গান্ধীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বলেন,
“তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা বোঝেন না। যাঁর নিজের নাম একাধিক মানহানির মামলায় জড়িত, যিনি সারাদেশ ঘুরে জামিন নিচ্ছেন, তিনি এখন নির্বাচন কমিশনকে ‘ফ্রড’ বলছেন— এটা চরম সীমালঙ্ঘন।”
রবি শঙ্কর প্রসাদ আরও বলেন,
“নরেন্দ্র মোদী ২০১৫ সাল থেকে একের পর এক রাজ্য ও জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হচ্ছেন। সেই জয়কেও যদি আপনি (রাহুল গান্ধী) ‘ভোট চুরি’ বলেন, তবে আপনি শুধু মোদীজিকেই নয়, দেশের সাধারণ ভোটারদেরকেও অপমান করছেন। যাঁরা মোদীর সততা, কর্মনিষ্ঠা ও দেশের উন্নয়নের স্বার্থে ভোট দিয়েছেন।”
️ ‘হতাশা ও রাগ’ থেকেই এই অভিযোগ: বিজেপি
বিজেপির বক্তব্য, কংগ্রেস বারবার জনসমর্থনে ব্যর্থ হচ্ছে, এবং সেই হতাশা থেকেই বিরোধী দলনেতা এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন,
“যখন জনগণ আপনাদের (কংগ্রেস) প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, তখন এইরকম বেপরোয়া মন্তব্য করে মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে, এতে লাভ হবে না। মানুষ আরও স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।”
বিজেপি অভিযোগ করে, এই ধরনের বক্তব্যে গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলিকে অবমাননা করা হচ্ছে, এবং একটি সংবেদনশীল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি দেশের মানুষের বিশ্বাস ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যেখানে একদিকে কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিযোগ করছে নির্বাচনে চূড়ান্ত কারচুপি হয়েছে, অন্যদিকে বিজেপি এই অভিযোগকে ‘আত্মস্বীকৃত পরাজয়ের প্রতিফলন’ হিসেবে ব্যাখ্যা করছে।
ভারতের রাজনীতিতে ফের একবার নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে রাজনৈতিক তরজা যে আরও চড়বে তা বলাই যায়।








