
এক মাসে একাধিক চুরি, এবার ব্যাংককর্মীর বাড়ি টার্গেট—নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় প্রশ্নচিহ্ন।
খোয়াই ত্রিপুরা, ০৩ জুন ২০২৫, প্রতিবেদক; কালীদাস ভৌমিকঃ খোয়াই শহরে কিছুদিনের স্বস্তির পর ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠল চুরি-ডাকাতির মত অপরাধ। মঙ্গলবার বিকেলে শহরের পুর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে, অরবিন্দ পার্ক সংলগ্ন বাসিন্দা প্রদীপ শীলের বাড়িতে ঘটে যায় একটি অত্যন্ত দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা। ঘরের পেছনের জানালার গ্রিল কেটে, ধারালো অস্ত্র—একটি বটি ও একটি দা ব্যবহার করে—চোরেরা দুটি স্টিলের আলমারি ভেঙে নিয়ে পালায় নগদ টাকা, সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী।
চুরির সময় প্রদীপ শীল এবং তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা শীল কেউই বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। প্রদীপবাবু কর্মসূত্রে খোয়াই অফিসটিলা গ্রামীণ ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করছিলেন, এবং তাঁর স্ত্রী চিকিৎসার জন্য গৌহাটি গিয়েছিলেন। আজ বিকেলে সঙ্গীতা শীল বাড়িতে ফিরে এসে দেখতে পান দরজা খোলা, ঘরে ঢুকে চরম অচেনা দৃশ্য—দুটি ভাঙা আলমারি এবং সব কিছু তছনছ করা অবস্থায়। অবিলম্বে তিনি স্বামীকে ফোনে জানান, এবং পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে খোয়াই থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে এবং দম্পতিকে নির্দেশ দেয়, ঘরের কোনো জিনিসে হাত না দিতে—তদন্তের স্বার্থে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধুমাত্র ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তোলা এবং কিছু সাধারণ প্রশ্ন করাই যেন পুলিশের তদন্তের শেষ ধাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘটনার জেরে আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েছে খোয়াই শহরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। গত দেড় মাসে শহরজুড়ে অন্তত ৮ থেকে ১০টি দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। অথচ পুলিশ আজ পর্যন্ত কোনও ঘটনাতেই প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি, এমনকি চিহ্নিত করতেও ব্যর্থ হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “যে হারে চুরি হচ্ছে, মনে হচ্ছে চোরের দলই এখন শহরের প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করছে। পুলিশের এই চূড়ান্ত ব্যর্থতা নাগরিক নিরাপত্তার ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিচ্ছে।”
পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো না হলেও, অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে যে তদন্ত চলছে এবং সন্দেহভাজন কয়েকজনকে নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়রা এই আশ্বাসে আর আশ্বস্ত নন। তাদের প্রশ্ন, যদি প্রতিটি চুরির ঘটনার পরেও ‘তদন্ত চলছে’ এই একটাই বক্তব্য থাকে, তবে কি কখনো শহরে নিরাপত্তা ফিরবে?