রাস্তা নেই, সেবা নেই—তবুও ভোট আসে ঠিকই: খামারটিলার করুণ বাস্তব”
খোয়াই, ০১ জুন ২০২৫ঃ টিকে রোড সংলগ্ন খামারটিলার দুর্গম রাস্তা থেকে আবারো উঠে এলো এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য, যা চোখে জল এনে দেয় মানবিকতার বুকে। সম্প্রতি সিজারিয়ান ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করা এক মা ও তাঁর সদ্যোজাত শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেলো—তাও কাঁধে চড়িয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হলেন স্বজনেরা।
হ্যাঁ, একবিংশ শতাব্দীর এই আধুনিক সময়ে, যেখানে শহরের বাতাসে উন্নয়নের ঢাক বাজছে, সেখানে এই গ্রামে পৌঁছাতে এখনো কাঁধই ভরসা। রাস্তা বলতে যা বোঝায়, তা এখানে একেবারেই অনুপস্থিত। চিকিৎসা, শিক্ষা কিংবা প্রশাসনিক সহায়তা—সবকিছু থেকেই যেন এই অঞ্চল এক প্রকার বিচ্ছিন্ন।
গ্রামের মানুষের কণ্ঠে চাপা ক্ষোভ, “আমরা এখন দূরবীন দিয়ে খুঁজি সরকারকে, প্রশাসনকে। কেউ আসেনা, কেউ শোনেনা আমাদের কথা।”
সেই গ্রামেরই এক বৃদ্ধ বলেন, “এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। অসুস্থ রোগীকে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়েছে। ভিডিও ভাইরালও হয়েছিল। তবুও বদলায়নি কিছুই।”
আজকের এই ঘটনায় স্পষ্টতই উঠে এলো ব্যর্থ অবকাঠামোর নির্মম প্রভাব। মা এবং নবজাতক, দুই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পেরিয়ে এলেন সেই কর্দমাক্ত, আঁকাবাঁকা ও বিপদসঙ্কুল পথ। এমন এক দৃশ্য, যা দেখে যে কারো মন ব্যথিত হবে।
প্রশ্ন উঠছে—এই উন্নয়নের মহাসড়কে কারা পড়ে রয়ে গেছে পেছনে? এই গ্রাম কি শুধুই ভোটের সময় মনে পড়ে যায়? প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি কি পৌঁছাবে এই উপেক্ষিত জনপদের দিকে?
সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আবারো চাপে পড়ছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। তবে দেখা যাক, এবার তারা কেবল বক্তব্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি বাস্তবিক কোনো পরিবর্তনও দেখা যায়।
এই দৃশ্য শুধু একটি খবর নয়, এটি একটি আহ্বান—অবহেলিতদের জীবনে একটু আশার আলো ফিরিয়ে আনার।