
ত্রিপুরায় চক্ষু চিকিৎসা খাতে বড় পদক্ষেপ: ১৯ জন অপটোমেট্রিস্ট ও ২০ জন অস্থালমিক এসিসটেন্ট নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি, এসোসিয়েশনের অভিনন্দন।
আগরতলা, ২৭ মে ২০২৫ঃ ত্রিপুরা রাজ্যের স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে চক্ষু চিকিৎসা পরিষেবার মানোন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি ত্রিপুরা সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন (এনএইচএম) সম্মিলিতভাবে রাজ্যে ১৯ (উনিশ) জন অপটোমেট্রিস্ট এবং ২০ (কুড়ি) জন অস্থালমিক এসিসটেন্ট নিয়োগের জন্য একটি নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই নিয়োগের মাধ্যমে রাজ্যের প্রত্যন্ত এবং পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলিতেও আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
অল ত্রিপুরা অপটোমেট্রি এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সুবীর ভৌমিক বলেন, “এই নতুন নিয়োগের ফলে রাজ্যের জনগণ আধুনিক চক্ষু চিকিৎসার সেবা আরও সহজে ও দ্রুততার সঙ্গে পাবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষদের জন্য এটি এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।”
বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগে মোট ২৫ জন সরকারি অপটোমেট্রিস্ট এবং আরও ২৫ জন অস্থালমিক এসিসটেন্ট এনএইচএম-এর অধীনে কর্মরত রয়েছেন। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতি ২০ হাজার জনসংখ্যার জন্য অন্তত একজন অপটোমেট্রিস্ট থাকা আবশ্যক। সেই হিসাবে রাজ্যের মোট জনসংখ্যা অনুযায়ী সরকারি খাতে প্রায় ২০০ জন অপটোমেট্রিস্ট নিয়োগ করা প্রয়োজন। অর্থাৎ বর্তমানে এই খাতে ১৭৫ জন পদের ঘাটতি রয়ে গেছে, যা রোগীদের প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।
এই প্রেক্ষিতে অল ত্রিপুরা অপটোমেট্রি এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে অবিলম্বে রাজ্যে ২০০টি অপটোমেট্রিস্ট, ৫০টি সিনিয়র অপটোমেট্রিস্ট এবং ২০টি অপটোমেট্রি অফিসারের নতুন পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। সুবীর ভৌমিক বলেন, “জনগণের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে হলে এই নিয়োগগুলি জরুরি। আমরা চাই প্রতিটি নাগরিক যেন প্রাথমিক ও বিশেষায়িত চক্ষু চিকিৎসা সহজেই লাভ করতে পারেন।”
ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের নিয়োগ উদ্যোগের ফলে চক্ষু রোগ প্রতিরোধ, প্রাথমিক শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা অনেক বেশি কার্যকর হবে এবং রোগীর সংখ্যা কমবে। একই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে রাজ্যের স্বাস্থ্য সূচকেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চোখের রোগের দ্রুত বৃদ্ধি এবং সচেতনতার অভাবের মধ্যে এই সরকারি পদক্ষেপ একটি আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন এনে দেবে বলেই মনে করছে স্বাস্থ্যসচেতন মহল। চক্ষু চিকিৎসা পরিসেবাকে গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে এবং রাজ্যের প্রতিটি মানুষের দৃষ্টিশক্তি সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই নিয়োগ একটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ বলেই মত অল ত্রিপুরা অপটোমেট্রি এসোসিয়েশনের।