
ত্রিপুরার জনজীবনে আবারও নেমে এলো অন্ধকারের ছায়া। কিছুদিন পূর্বে চানমারিতে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার ক্ষত এখনও পুরোপুরি শুকায়নি, তার মধ্যেই ফের এক নিষ্পাপ শিশুর অকাল মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেল গোটা কালাভেপা নলসিং সর্দার পাড়া।
সাব্রুম, ২১ মে ২০২৫ঃ মনুবাজার থানার অন্তর্গত এই প্রত্যন্ত গ্রামে ৯ বছর বয়সী উজ্জশিখা ত্রিপুরার মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় চরম উত্তেজনা ও শোকের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, উজ্জশিখা ত্রিপুরা, পিতা রহিম ত্রিপুরার কন্যা, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেল আনুমানিক ৪টা নাগাদ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও শিশুটির কোনো সন্ধান মেলেনি। দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশীদের সহায়তায় রাতভর তল্লাশি চালালেও কোনো ফল মেলেনি।
অবশেষে আজ, বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ বাড়ির লাগোয়া রাবার বাগানে এক বিভৎস চিত্রের সাক্ষী হয় গ্রামবাসীরা। একটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। পরে নিশ্চিত হওয়া যায়, সেটি নিখোঁজ হওয়া উজ্জশিখার মৃতদেহ।
মৃতদেহের অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, শিশুটিকে অপহরণের পর নির্যাতনের শিকার করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুর কারণ জানায়নি, তবে বিষয়টি ঘিরে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে।
মনুবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই ঘটনার পেছনে কে বা কারা জড়িত, তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত চালাচ্ছে এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
স্থানীয়রা জানান, “এই এলাকায় এমন নৃশংস ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এখন আমরা নিজের সন্তানদের নিয়েও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের উচিত দ্রুত দোষীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।”
এদিকে, গোটা এলাকায় শোক ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুটির স্কুল, প্রতিবেশী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা শোকাহত। সামাজিক মাধ্যমে এবং স্থানীয় মহলে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, শিশুদের নিরাপত্তা কোথায়? কতবার এমন ঘটনা ঘটলে প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নেবে?
এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।