
আগরতলা, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ঃ দেশজুড়ে গণতন্ত্র ও সংবিধানের ওপর অব্যাহত আঘাত এবং স্বৈরাচারী নীতির প্রতিবাদে এবার পথে নামল ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস। সংবিধান রক্ষার লক্ষ্যে এক জোরালো বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার আগরতলার প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি বিশাল প্রতিবাদ রেলি বের করা হয় কংগ্রেসের তরফে। এই রেলিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নেতাজি চৌমুহনি অবস্থিত আয়কর ভবনের সামনে এসে থামে, যেখানে পুলিশের কড়া ব্যারিকেড থাকলেও কংগ্রেস কর্মীরা তা অতিক্রম করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।

প্রচণ্ড উত্তেজনার মধ্যেও বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ, কিন্তু ছিল দৃঢ় বার্তা—সংবিধান, গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় কংগ্রেস আপসহীন। বিক্ষোভ শেষে আয়কর ভবনের সামনেই এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ।
এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্তমান বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ সাহা, বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়, এবং যুব কংগ্রেস নেতা নীলকমল সাহা সহ অসংখ্য নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা। তাঁরা সকলেই বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দাবি তোলেন—“দেশের সংবিধান রক্ষা করতে হলে সকলকে একত্রিত হতে হবে”।
বক্তব্যে সুদীপ রায় বর্মন বলেন, “আজ ভারতের গণতন্ত্র সংকটের মুখোমুখি। যে সংবিধান দেশের ভিত্তি, আজ তা বারবার পদদলিত হচ্ছে। কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। জনগণের অধিকার, ন্যায় ও স্বাধীনতা রক্ষায় আমরা সঙ্কল্পবদ্ধ।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ সাহাও তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ত্রিপুরায় গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংসের পথে চলছে। আজকে রাজ্যজুড়ে মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। আমরা সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে পথে নেমেছি। এই লড়াই চলবে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, পুলিশ প্রশাসন এই বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। শহরের যানবাহন চলাচল আংশিকভাবে ব্যাহত হলেও সাধারণ মানুষ কংগ্রেসের এই প্রতিবাদকে অনেকাংশে সমর্থন জানায়।
এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড, দলীয় পতাকা ও সংবিধান রক্ষার বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার বহন করছিলেন। সমবেত কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হচ্ছিল—“সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচাও”, “গণতন্ত্রের হত্যা বন্ধ করো”, “জনগণের কণ্ঠরোধ চলবে না”।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কংগ্রেসের এই ধরনের কর্মসূচি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছে—দেশের সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষায় তারা কখনো পিছু হটবে না।