
শান্তিরবাজার, ত্রিপুরা, ২০ মার্চ ২০২৫ঃ তোল্লাবাজীর আরেক নাম মাইক্রোফাইনেন্স। এইবার শান্তির বাজারের দক্ষিণ তাকমার মধুচন্দ্র চাকমা পাড়ার ২৮ জন গ্রাহকের বিরুদ্ধে অর্থ লুটের অভিযোগ উঠেছে বেদিকা ক্রেডিট ক্যাপিটাল লিমিটেড মাইক্রোফাইনেন্সের নামে । এই ঘটনার পেছনে একজন স্থানীয় ব্যক্তি, রাখাল চাকমা, মাইক্রোফাইনেন্সের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে বলে জানাগেছে । স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, রাখাল চাকমা নিজেকে মাইক্রোফাইনেন্সের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে মধুচন্দ্র চাকমা পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে লোনের সুবিধা পেতে সাহায্য করতেন। গ্রাহকদের থেকে কিস্তি সংগ্রহ করার পর, রাখাল চাকমা তাদের কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র দিতেন না। গত বছর বন্যার সময়ও, এলাকার লোকজন কষ্টসহকারে তাদের কিস্তি পরিশোধ করেছিল। কিন্তু কিছুদিন পর, ভেদিকা ক্রেডিট ক্যাপিটাল লিমিটেড মাইক্রোফাইনেন্স তাদের গ্রাহকদের নোটিশ প্রদান করে জানায়, গ্রাহকদের প্রদত্ত কিস্তি সঠিকভাবে জমা হচ্ছে না। এই ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং তারা বুঝতে পারেন যে তাদের অর্থ সম্ভবত খোয়ানো গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে, রাখাল চাকমা গ্রাহকদের কাছ থেকে কিস্তি সংগ্রহ করে ওই অর্থ মাইক্রোফাইনেন্স অফিসে জমা না করেই নিজের কাজে ব্যবহার করেছেন। বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা বৃহস্পতিবার শান্তির বাজারে ভেদিকা ক্রেডিট ক্যাপিটাল লিমিটেডের অফিসে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন এবং জানিয়ে দেন যে, রাখাল চাকমা তাদের কাছে অর্থ গ্রহণ করলেও, কাগজপত্র না দেওয়ার ফলে তারা সন্দেহজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। একজন গ্রাহক জানান, তার নামেও লোন অনুমোদন হয় কিন্তু তিনি এতে কিছু জানেন না এবং তার কাছ থেকে শুধু আধার কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছিল, এরপর লোনের টাকা তুলা হয়েছে। বিক্ষোভের পর, বেদিকা মাইক্রোফাইনেন্সের অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, তারা ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। অফিস কর্মীরা মৌখিকভাবে জানান যে, বর্তমানে অফিসে ম্যানেজার নেই এবং তারা নতুন কর্মী, তাই বিস্তারিত কিছু জানাতে পারছেন না। তারা আরো জানান, রাখাল চাকমা এই অফিসের কোনো কর্মী নন।
এখন প্রশ্ন উঠছে, মধুচন্দ্র চাকমা পাড়ার ২৮ জন গ্রাহককে এইভাবে ঠকানোর ঘটনায় প্রশাসন কিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এ ধরনের প্রতারণার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এলাকাবাসী আশা করছেন, প্রশাসন যথাযথ তদন্ত চালিয়ে তাদের হারানো অর্থ ফেরত দিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।