
২৮শে ফেব্রুয়ারি, স্যার চেন্নপ্পা ভগবতী রমনের ‘রমন এফেক্ট’ আবিষ্কারের স্মরণে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস। ১৯৮৭ সাল থেকে এই দিনটি বাংলাদেশে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। স্যার সি ভি রমনের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা আজও বিশ্ব বিজ্ঞান জগতকে উজ্জীবিত করছে।
এদিন, বিজ্ঞান শিক্ষা এবং মৌলিক জ্ঞানচর্চার প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উদযাপন করা হয়। পাশাপাশি দেশবাসীর মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার জন্যে প্রতিবছরই নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আজকের এই দিনটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে প্রতিটি মানুষের অবদান এবং বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ার প্রত্যয়ের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়।
তবে, এই দীর্ঘ ৭৫ বছরের স্বাধীনতার যাত্রায়, যদিও দেশে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে, তবুও একটি বড় অংশের জনগণ আজও কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস এবং অজ্ঞানতায় নিমজ্জিত রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের দেশের বৈজ্ঞানিক চিন্তা এবং যুক্তিবাদী মনোভাবকে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বহু বিখ্যাত মনীষী, যেমন রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার দত্ত এবং মাহেন্দ্রলাল সরকাররা কাজ করেছেন। তাঁরা যে শিক্ষাব্যবস্থা চালুর পক্ষে লড়াই করেছিলেন, তা আজও আমাদের জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে আছে। কিন্তু এখন যে অবস্থায় আমরা আছি, সেখানে সমাজে যুক্তিবাদের চর্চা বা বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি।
ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটি প্রতিবছরের মতো এবছরও জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালন করেছে, যেখানে নানা কর্মসূচি এবং আয়োজন ছিল। সকালে, আগরতলার পেনডেস চৌমুহনীতে বরণীয় বিজ্ঞানীদের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়। এরপর শপথ বাক্য পাঠ, আলোচনা সভা, হাতে কলমে বিজ্ঞান প্রদর্শনী এবং কুসংস্কার বিরোধী শো অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া টেলিস্কোপ ব্যবহার করে আকাশ পর্যবেক্ষণের মতো নানা শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ।
এদিনের এই উদ্যোগ এবং অনুষ্ঠানগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল সকলকে বিজ্ঞানমনস্কতা অর্জনের দিকে এগিয়ে নেওয়া এবং কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে, কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক জ্ঞানচর্চার পথে চলতে পারে।
অবশেষে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ উন্নতির দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে, সবার মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তোলার প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।