আগরতলা, ১৭ নভেম্বর ২০২৪: ত্রিপুরার আগরতলায় প্রাক্তন যুব কংগ্রেস নেতা রাকু দাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তার নাম ব্যবহার করে একটি জাল সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। যুব কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল গতকাল আগরতলা পশ্চিম থানায় এ বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেছে। তাদের দাবি, রাকু দাসের নাম ব্যবহার করে এই প্ল্যাটফর্মে বিভ্রান্তিকর ও আপত্তিজনক কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে, যা তার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি এবং দলের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। যুব কংগ্রেসের অভিযোগ অনুযায়ী, সামাজিক মাধ্যমের এই প্ল্যাটফর্মটি রাকু দাসের নামে বিভিন্ন মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে একটি সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিনিধিদলের দাবি, এটি একটি অপপ্রচারমূলক কৌশল হতে পারে, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রচিত। তারা জানিয়েছে, এই প্ল্যাটফর্মে কিছু সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। যুব কংগ্রেসের নেতারা জানিয়েছেন, “রাকু দাস একজন খ্যাতনামা রাজনৈতিক নেতা, যিনি যুব কংগ্রেসের এক সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তার নাম ব্যবহার
করে এই ধরনের জাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি দ্রুত তদন্ত করে আসল তথ্য সামনে আনতে। এর মাধ্যমে যারা এর পেছনে রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।” আগরতলা পশ্চিম থানার পুলিশ এফআইআর গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, “এখনই তদন্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, তবে এটি একটি বৃহৎ চক্রের অংশ হতে পারে। আমরা সামাজিক মাধ্যমের আর্কাইভ এবং অন্যান্য ডেটা বিশ্লেষণ করছি। তদন্তের পর প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” তবে, পুলিশ আরো জানায় যে, এই ধরনের ঘটনা শুধু একটি রাজনৈতিক সমস্যা নয়, এটি সামাজিক সুরক্ষা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়েও একটি গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য তারা বিষয়টি দ্রুত এবং সাবধানতার সঙ্গে তদন্ত করছে। এ বিষয়ে রাকু দাসের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে যে তিনি এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন। রাকু দাসের এক সহকর্মী জানান, “এই ধরনের প্ল্যাটফর্মের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো ব্যক্তি বা দল তার নাম ব্যবহার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে, সে ব্যাপারে তিনি উদ্বিগ্ন।” এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, সামাজিক মাধ্যমের নিরাপত্তা নিয়েও বেশ
আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের জাল প্ল্যাটফর্ম তৈরির ঘটনা, যেখানে একটি প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম ব্যবহার করা হয়, এটি ডিজিটাল নিরাপত্তার বড় একটি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে, এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়লে তা জনমনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শিগগিরই শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তে সাইবার ক্রাইম বিভাগও যুক্ত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে যে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। এছাড়া, সামাজিক মাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা অপরিহার্য। আগরতলা পশ্চিম থানায় দায়ের করা এফআইআর-এ রাকু দাসের নাম উল্লেখ করা হলেও, তদন্তের পর অন্য ব্যক্তিদেরও জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, তারা সঠিক তথ্য সংগ্রহ করার পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে এক ধরনের অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে, যে কেউ বা কোন দলই যদি এমন অপপ্রচার চালায়, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করাই উচিৎ।