নাইজেরিয়া, ১৭ নভেম্বর ২০২৪: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রথমবারের মতো নাইজেরিয়া সফর করেছেন এবং সফরের প্রথম দিনেই তিনি দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান ‘দ্য গ্র্যান্ড কম্যান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য নাইগার’ লাভ করেন। এটি এমন একটি সম্মান যা মূলত নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘দ্য অর্ডার অব দ্য নাইগার’ এর উপাধি হিসেবে দেওয়া হয়। মোদীকে এই সম্মান প্রদানে, তার বিশ্বজুড়ে নেতৃত্ব এবং ভারত-নাইজেরিয়া সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজা পৌঁছান। তাঁর সফরের উদ্দেশ্য ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় করা এবং দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে নতুন যোগাযোগ, বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক সমঝোতা গড়া। তবে, মোদীকে সম্মানিত করার বিষয়টি ছিল এ সফরের অন্যতম শীর্ষ মুহূর্ত। নাইজেরিয়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে যখন ‘দ্য গ্র্যান্ড কম্যান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য নাইগার’ সম্মান প্রদান করা হয়, তখন উপস্থিত ছিলেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এই সম্মানটি মোদীকে দেওয়ার সময়, বুহারি রাষ্ট্রীয় স্তরে তার অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, মোদী ভারতকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করার পাশাপাশি, ভারতীয় ও নাইজেরিয়ান জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। প্রসঙ্গত, ‘দ্য গ্র্যান্ড কম্যান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য নাইগার’ সম্মানটি নিঃসন্দেহে নাইজেরিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান, যার প্রথম স্থানে রয়েছে ‘দ্য গ্র্যান্ড মাষ্টার অব দ্য অর্ডার অব দ্য নাইগার’, যা সুশীল ও বিশ্বনেতা পর্যায়ের মহামান্য ব্যক্তিদের প্রদান করা হয়। এদিকে, মোদী এই সম্মান গ্রহণের পর নাইজেরিয়ার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভারত ও নাইজেরিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, “আজকের এই সম্মান শুধু আমার জন্য নয়, এটি ভারত এবং নাইজেরিয়ার সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার লক্ষ্যে একটি মাইলফলক। আমি এই সম্মান নিঃসন্দেহে ভারতের জনগণের এবং ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি এক স্বীকৃতি হিসেবে গ্রহণ করছি।” ১৯৬৯ সালে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পর, প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে ‘দ্য গ্র্যান্ড কম্যান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য নাইগার’ সম্মান প্রদান করা হলো। এটি মোদী সরকারের আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ সফলতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সম্মান মোদীকে দেওয়া হল এমন এক সময়ে যখন ভারত-নাইজেরিয়া সম্পর্ক বহু বছরের ঐতিহাসিক জল্পনা-কল্পনা এবং পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টার মধ্যে গভীরভাবে প্রোথিত। মোদী ১৭ তম আন্তর্জাতিক সম্মান হিসেবে এই সম্মান পেলেন, যা তার কূটনৈতিক সফলতা ও বৈশ্বিক নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে। এটি মোদীর জন্য একটি বড় অর্জন, কারণ এর আগেও তিনি ১৬টি আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ করেছেন, যার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য সম্মান ছিল বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে। এ পর্যন্ত, তিনি এশিয়ার অন্যতম সফল ও ক্ষমতাশালী নেতার মর্যাদা লাভ করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা তাকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখেন। তবে, নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে এমন একটি সম্মান লাভ তাকে আরও আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে অগ্রগতি প্রদান করেছে। নাইজেরিয়ার জনগণও এই সফরটি অত্যন্ত গর্বের সাথে গ্রহণ করেছে। নাইজেরিয়ার সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর জনগণ সামাজিক মাধ্যমে মোদীকে সম্মান জানিয়ে অভিনন্দন বার্তা পাঠাচ্ছে। বিশেষত, নাইজেরিয়ার যুব সমাজ মোদীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির প্রশংসা করে আসছে, যেগুলি ভারত এবং নাইজেরিয়ার মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ আরও বৃদ্ধি করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এর আগেও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন এবং ভারতীয় কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তবে, নাইজেরিয়ায় তার এই সফর বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই দেশটি পশ্চিম আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজার। মোদী সরকারের আমলে, ভারত এবং নাইজেরিয়ার সম্পর্ক কেবল রাজনৈতিক স্তরে নয়, বরং বাণিজ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। মোদী সরকারের ‘ACT EAST’ নীতির আওতায়, ভারত আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে বহুপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে, যা আফ্রিকা মহাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সহযোগিতার জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরের মূল লক্ষ্য ছিল ভারত ও নাইজেরিয়ার মধ্যে বিভিন্ন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করা এবং বিভিন্ন নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা। তাঁরা নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রযুক্তির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এই সম্মানকে মোদী তার রাজনৈতিক যাত্রায় আরও এক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন এবং আগামী দিনে ভারত ও নাইজেরিয়া সম্পর্কের আরো শক্তিশালী উন্নয়ন এবং কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়ে আশাবাদী। এটি ভারতের কূটনীতির এক উল্লেখযোগ্য জয় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক পরিসরে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধির একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে।
বীর বিক্রম কলেজ অফ ফার্মেসি আয়োজন করল “নবরং ২০২৪” অনুষ্ঠান, যেখানে স্টেপ আপ ওয়েস্টার্ন ডান্স একাডেমির মুগ্ধকর পারফরম্যান্স।
“নবরং ২০২৪” অনুষ্ঠান,
Read more