রক্তের চাহিদা পূরণে মানবিক প্রয়াস—অতিথিদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হলো মহৎ রক্তদান কর্মসূচী।
শান্তিরবাজার, ত্রিপুরা । রিপোর্ট-বাহাদুর ত্রিপুরাঃ রক্তদান—মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যা মানুষের জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে আজও অমূল্য ও অপরিহার্য। রক্তের কোনো কৃত্রিম বিকল্প নেই, এবং প্রতিনিয়ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মুমূর্ষু রোগীদের জন্য রক্তের প্রয়োজন বাড়তে থাকে। এই বাস্তব পরিস্থিতি মাথায় রেখে শনিবার নব দিগন্ত সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে শান্তির বাজার অটল মার্কেটে আয়োজন করা হয় একটি সুশৃঙ্খল ও মানবিক রক্তদান শিবির। শিবির ঘিরে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় উৎসবের আবহ এবং মানবসেবার এক ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।

আজকের রক্তদান শিবিরের শুভ উদ্বোধন করেন শান্তির বাজার পুরপরিষদের মাননীয়া চেয়ারম্যান সপ্না বৈদ্য। উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান,
“রক্তদান শুধু দায়িত্বই নয়, এটি এক গভীর মানবিকতা। নিয়মিত এমন আয়োজন হলে সমাজ উপকৃত হবে এবং বহু রোগীর প্রাণ রক্ষা সম্ভব হবে।”
উদ্বোধকের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন শান্তির বাজার পুরপরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সত্যব্রত সাহা, বিশিষ্ট সমাজসেবী দেবাশীষ ভৌমিক, নব দিগন্ত সামাজিক সংস্থার প্রেসিডেন্ট সত্যজিৎ পাটারী সহ সংস্থার সক্রিয় সদস্যরা ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অতিথিবৃন্দ সকলেই নব দিগন্ত সামাজিক সংস্থার এই মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও এমন কার্যক্রম জারি রাখার অনুরোধ জানান।

সংস্থা সূত্রে জানা যায়, নব দিগন্ত সামাজিক সংস্থার সদস্যরা প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের দুঃখ–কষ্টে পাশে দাঁড়ান এবং সৎ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নানা সামাজিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য, আর তাই রক্তদান শিবিরের মতো মানবকল্যাণমূলক কর্মসূচি তারা নিয়মিত আয়োজন করে থাকেন।
আজকের রক্তদান শিবির সম্পর্কিত তথ্য জানাতে গিয়ে সংস্থার প্রেসিডেন্ট সত্যজিৎ পাটারী সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
“এই কর্মসূচিতে প্রায় ৫০ জন রক্তদানের পরিকল্পনা রয়েছে। সমাজের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই আমাদের অনুপ্রেরণা।”

এদিন শিবিরে উপস্থিত সাধারণ মানুষ এবং রক্তদাতাদের মধ্যে ছিল গভীর উৎসাহ ও উদ্দীপনা। রক্তদান করতে উৎসুক বহু তরুণ–তরুণীকে দীর্ঘক্ষণ লাইনেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন রোগীর জীবন বাঁচাতে নিজের রক্তদান করতে পেরে অনেকে নিজেদের গর্বিতও মনে করছেন বলে জানিয়েছেন।
রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে এলাকায় তৈরি হয় এক ঐক্যবদ্ধ সামাজিক পরিবেশ, যেখানে ভেদাভেদ ভুলে একটাই বার্তা ছড়িয়ে পড়ে—“রক্তদান মহৎ দান, মানবসেবায় এগিয়ে আসুন।”








