
দেশপ্রেম, ঐক্য এবং জাতীয় গৌরবের এক অপূর্ব অভিব্যক্তি হয়ে উঠলো আজকের তিরঙ্গা রেলি, যা অনুষ্ঠিত হলো রাজধানী আগরতলার বুকে। টাউন বরদোয়ালি এলাকার নাগরিকদের উদ্যোগে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে উৎসারিত এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশবাসীর প্রতি এক গভীর বার্তা পৌঁছে দেওয়া হলো—“আমরা গর্বিত, আমরা এক, আমরা ভারত”।
আগরতলা, ১৯ মে: রেলিটি আজ সকালে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সম্মুখ থেকে সূচনা করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পথ অতিক্রম করে শেষ হয় বটতলা চৌমুহনীতে। হাতে হাতে ভারতীয় জাতীয় পতাকা, কণ্ঠে দেশাত্মবোধক স্লোগান, আর হৃদয়ে দেশমাতৃকার প্রতি শ্রদ্ধা—সব মিলিয়ে একটি ঐতিহাসিক এবং হৃদয়গ্রাহী পরিবেশ তৈরি হয় গোটা শহর জুড়ে। রেলিতে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন বয়সের নাগরিক, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, সমাজকর্মী এবং সাধারণ মানুষ। রেলিটি ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল।

এই রেলির মূল লক্ষ্য ছিল দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সদা সজাগ ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কৃতজ্ঞতা জানানো এবং দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানানো। আয়োজকগণ জানান, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে সারা দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ আরও দৃঢ় হয়েছে, এবং এই তিরঙ্গা রেলির মাধ্যমে তাঁরা সেই দেশাত্মবোধক অনুভূতিকে বাস্তবে প্রকাশ করেছেন।
রেলির সূচনাস্থলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী ও রাজ্যের বর্ষীয়ান নেতা ভগবান চন্দ্র দাস বলেন, “যে জাতি নিজের সেনাবাহিনীকে সম্মান দিতে জানে, সেই জাতি কখনো পরাজিত হয় না। আজকের এই রেলি আমাদের যুব সমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এক উদাহরণ হয়ে থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “ত্রিপুরা থেকে দেশের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানোর এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।”
বিধায়ক দীপক মজুমদার তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, “দেশের নিরাপত্তা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝাতে আজকের এই রেলির ভূমিকা অপরিসীম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আজ দেশ আত্মনির্ভরতার পথে এগোচ্ছে, আর আমাদের সেনাবাহিনী সীমান্তে অদম্য সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। এই রেলির মাধ্যমে আমরা তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছি।”
রেলিতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ছিল—“জয় হিন্দ”, “সেনার গর্ব, জাতির সম্পদ”, “ধন্য প্রধানমন্ত্রী, ধন্য সেনা”, “তিরঙ্গার মান, ভারতের প্রাণ” ইত্যাদি। জাতীয় পতাকা ও ব্যাজ ধারণ করে শহরের রাস্তায় এই অভূতপূর্ব রেলি মানুষের মধ্যে গভীর আবেগের সঞ্চার করে।
পুরো কর্মসূচিটি সফলভাবে সম্পন্ন হয় স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায়। শহরবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একত্রিত হওয়া এই রেলিকে নিঃসন্দেহে একটি সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই রকম উদ্যোগ সমাজে দেশপ্রেম, ঐক্য এবং জাতীয় পরিচয়ের বোধকে আরও দৃঢ় করে তোলে। টাউন বরদোয়ালির এই রেলি শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং বর্তমান প্রজন্মের সামনে একটি আদর্শ বার্তা—দেশকে ভালোবাসতে শেখো, দেশরক্ষীদের শ্রদ্ধা করো।