
ত্রিপুরা, আগরতলা: আজ, ৪ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার দুর্গাবাড়ি মন্দিরে উদযাপিত হলো বাঙালি হিন্দুদের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব বাসন্তি পূজা। এই পূজার আয়োজনটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, কারণ এটি প্রতি বছর বসন্তের আগমনে পালন করা হয়, যা দেবী দুর্গার এক বিশেষ রূপকে স্মরণ করে।
দুর্গাবাড়ি মন্দিরে বাসন্তি পূজার আয়োজন ছিল এক বিশাল ধর্মীয় অনুষ্ঠান। পূজা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছিল বিভিন্ন রঙের ফুল এবং পবিত্র মাটি দিয়ে। মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন হাজারো ভক্ত, যারা শুদ্ধ বিশ্বাস ও একনিষ্ঠতার সঙ্গে দেবীর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন। ভক্তরা শঙ্খ, ঢাক এবং মৃদঙ্গের তালে গাইছিলেন devotional গান, এবং বিভিন্ন পূজা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে তারা দেবী দুর্গার উদ্দেশ্যে পুজো নিবেদন করেন।

বিশেষজ্ঞ পূজারী মহাশয় শ্রীমন্ত দেবব্রত বলেন, “বাসন্তি পূজা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। আমরা প্রতি বছর এই পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে আরাধনা করে থাকি, যাতে সমাজে শান্তি, সমৃদ্ধি ও ঐক্য বজায় থাকে।”
ভক্তরা একে অপরের সঙ্গে মিষ্টি কথা ও প্রার্থনায় আবদ্ধ হয়ে যান, এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মন্দিরের সন্নিকটে কিছু ছোটখাটো স্টলও বসেছিল, যেখানে ভক্তরা বিভিন্ন ধরনের প্রসাদ, পঞ্চমুখী উপহার এবং ধর্মীয় সামগ্রী কিনতে পারেন।
মন্দিরের এক স্থানীয় ভক্ত রোহিত দে বলেন, “এটা আমাদের জন্য একটি বিশেষ দিন। প্রতি বছর এই দিনে আমরা দুর্গাবাড়ি মন্দিরে এসে দেবীর আশীর্বাদ গ্রহণ করি। এই পূজা আমাদের জীবনে নতুন শক্তি এবং আশার আলো নিয়ে আসে।”

এবারের বাসন্তি পূজাতে ভক্তদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ ছিল মন্দিরের সন্নিকটে বসানো মেলা। মেলায় স্থানীয় শিল্পী ও কারিগররা তাঁদের তৈরী করা হস্তশিল্প এবং ধর্মীয় সামগ্রী প্রদর্শন করেন। এছাড়াও, মন্দির প্রাঙ্গণে সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশন করা হয় যা ভক্তদের মধ্যে আনন্দ এবং উৎসাহ সৃষ্টি করে।
ত্রিপুরার আগরতলা দুর্গাবাড়ি মন্দিরের বাসন্তি পূজা প্রতিবারের মতো এবারও ধর্মীয় ভাবগম্ভীরতা ও ঐতিহ্যবাহী আনন্দে পূর্ণ ছিল। এটি শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং ত্রিপুরার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি বড় অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে এই ধরনের অনুষ্ঠান ভবিষ্যতেও ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির মেলবন্ধন হিসেবে অব্যাহত থাকবে।