নিউজ ডেস্কঃ ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি, দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ, পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন এবং রাজ্যসভা (Rajya Sabha)-এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য একটি ইলেকটোরাল কলেজ গঠন করা হয়, যার সদস্যরা হলেন রাজ্যসভা ও লোকসভার নির্বাচিত এবং মনোনীত সদস্যরা।
উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, ধারা ৬৬-এ বলা হয়েছে যে, উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন একটি ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে। এই কলেজে অন্তর্ভুক্ত থাকেন রাজ্যসভা ও লোকসভার নির্বাচিত সদস্যরা এবং রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্যরা। উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে ভারতের নির্বাচন কমিশন, যা ধারা ৩২৪ অনুযায়ী ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী আইন এবং ১৯৭৪ সালের বিধি অনুসারে পরিচালিত হয়। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা হয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতোই, যেখানে প্রতিটি ভোটের মান সমান থাকে (১ ভোট)। ভোট দেওয়ার পদ্ধতি হল প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন উইথ সিঙ্গল ট্রান্সফারেবল ভোট।
উপ-রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের যোগ্যতা
উপ-রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে:
- প্রার্থীকে ভারতের নাগরিক হতে হবে।
- তার বয়স কমপক্ষে ৩৫ বছর হতে হবে।
- প্রার্থীকে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য যোগ্য হতে হবে।
- তাকে কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের কোনো অফিসে লাভজনক পদে কর্মরত থাকতে হবে না।
নির্বাচনী প্রক্রিয়া
- নির্বাচনের জন্য, প্রার্থীকে কমপক্ষে ২০ জন প্রস্তাবক এবং ২০ জন সমর্থকের স্বাক্ষরসহ মনোনয়ন পত্র জমা দিতে হয়।
- মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, নির্বাচন গোপন ব্যালটে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কোনো দলীয় হুইপের বাধ্যবাধকতা থাকে না এবং সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট প্রদান করেন।
- প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে হলে মোট বৈধ ভোটের ৫০% প্লাস ১ ভোটের একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা অর্জন করতে হবে।
- যদি প্রথম রাউন্ডে কোনো প্রার্থী এই কোটার মধ্যে আসেন না, তাহলে পরবর্তী রাউন্ডে ভোট স্থানান্তরিত হয় এবং প্রক্রিয়া চলতে থাকে যতক্ষণ না একজন প্রার্থী জয়ী হন।
উপ-রাষ্ট্রপতির মেয়াদ এবং পদত্যাগ
উপ-রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন, তবে কোনো কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেও পদত্যাগ বা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে চাইলে তাকে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হয়, যা রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করলে তা কার্যকর হয়। যদি কোনো কারণে উপ-রাষ্ট্রপতির পদ খালি হয়, তবে নতুন নির্বাচনের জন্য তৎকালীন সময়সীমার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
নির্বাচনের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করা
উপ-রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের ফলাফল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট-এ একটি পিটিশন দাখিল করে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে। এই পিটিশনটি নির্বাচন ফল প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে হবে এবং এটি প্রার্থী বা অন্তত ১০ জন নির্বাচক দ্বারা সমর্থিত হতে হবে।
বর্তমানে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, যিনি ২০২২ সালের ১১ আগস্ট অফিসে যোগদান করেছেন। তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছেন।