
NEWS DESK:- ক্রিকেট ভক্তদের জন্য রবিবার সন্ধ্যা হয়ে উঠেছিল নিঃসন্দেহে হৃদস্পন্দন থামিয়ে দেওয়া এক রোমাঞ্চের সাক্ষী। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত আইপিএলের এক মহা-উত্কণ্ঠার ম্যাচে, কলকাতা নাইট রাইডার্স মাত্র এক রানের ব্যবধানে হারাল রাজস্থান রয়্যালসকে। শেষ বল পর্যন্ত টানটান উত্তেজনায় ভরা এই ম্যাচে ব্যাট-বলের লড়াই যেন পরিণত হয়েছিল সিনেমার চিত্রনাট্যে!
একদিকে আন্দ্রে রাসেলের বিধ্বংসী ইনিংস—মাত্র ২৫ বলে অপরাজিত ৫৭ রান, অন্যদিকে রাজস্থানের তরুণ নেতা রায়ান পরাগের ৯৫ রানের দুর্দান্ত লড়াই। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে কলকাতার নাইট বাহিনী।
প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা নাইট রাইডার্স নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে বিশাল ২০৬ রানের পাহাড়সম স্কোর। এই ইনিংসে রাসেলের ব্যাট যেন আগুন হয়ে ঝলসে উঠেছিল। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটে হতাশাজনক ফর্মে থাকা এই জ্যামাইকান সুপারস্টার অবশেষে দেখালেন, কেন তিনি ক্রিকেট বিশ্বের ভয়ংকর ফিনিশারদের একজন।
🎤 স্টুডিও বিশ্লেষণ:
এর আগে টুর্নামেন্টে মাত্র ৭২ রান করা রাসেল এদিন যেন নবজন্ম নিলেন। তাঁর ইনিংসে ছিল ছয়টি বিশাল ছক্কা ও চারটি চার, যা ইডেনের গ্যালারিকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস বেশ চাপে পড়ে যায়। তবে হাল ছাড়েননি অধিনায়ক রায়ান পরাগ। তিনি একা হাতে ম্যাচ ফিরিয়ে আনার যে চেষ্টা করেছেন, তা কেবল প্রশংসনীয় নয়, মনে রাখার মতো। পরপর ছয়টি বিশাল ছক্কা মেরে কলকাতার শিবিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এই তরুণ ব্যাটার।
তবে সমস্যা একটাই—তিনি একা ছিলেন। যশস্বী জয়সওয়ালের ৩৪ রান কিংবা শিমরন হেটমায়ারের ২৯ রান ম্যাচ জেতার জন্য যথেষ্ট ছিল না। শেষদিকে শুভম দুবে অপরাজিত ২৫ রান করলেও তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
শেষ ওভারে দরকার ছিল ২২ রান। উত্তেজনার পারদ যখন চূড়ায়, তখন শেষ বলে দরকার পড়ে মাত্র ৩ রান। শুভম দুবে ও জোফ্রা আর্চার প্রথম রানটি পূর্ণ করে দ্বিতীয় রান নেওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেন। কিন্তু এই সময় রিংকু সিং-এর ঝাঁপিয়ে পড়া ও চটপটি থ্রো ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়—আর্চার ছিলেন ক্রিজের বাইরে, এবং কলকাতা জিতে যায় মাত্র এক রানে!
এই জয় যেন পুরনো দিনের নাইট রাইডার্সের ট্রফি জয়ের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে! খেলোয়াড়দের উদযাপন, মাঠে উল্লাস, গ্যালারির গর্জন—সব মিলিয়ে রবিবার রাতে কলকাতা যেন রূপকথার শহরে রূপান্তরিত হয়েছিল।
এই জয় শুধু এক ম্যাচের দুই পয়েন্টই নয়, বরং নাইটদের কোয়ালিফায়ার রাউন্ডের দৌড়ে টিকে থাকার জোরালো বার্তা। রাসেলের ফর্মে ফেরা, রিংকুর উপস্থিত বুদ্ধি, দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা—সবকিছুই আশাব্যঞ্জক।
ক্রিকেট যে কেবল একটি খেলা নয়, বরং আবেগ, নাটক, এবং চরম অনিশ্চয়তার এক সম্মিলিত রূপ—তা আবারও প্রমাণ করল KKR বনাম RR এর এই ম্যাচটি। ক্রিকেটপ্রেমীরা হয়তো অনেক দিন এই ম্যাচ ভুলবেন না।