
আগরতলা, ০১ মে ২০২৫ঃ বিশ্বজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও সংগ্রামের প্রতীক এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করলো সিপিএম ও সিআইটিইউ-এর ত্রিপুরা রাজ্য শাখা। আগরতলায় পার্টি এবং সংগঠনের রাজ্য দপ্তরে এদিন সকাল থেকেই এক ভিন্ন আবহ তৈরি হয়। লাল পতাকার ছায়ায় শ্রমিক শ্রেণির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ঐক্যের বার্তা তুলে ধরা হয়।
সিপিএম-এর রাজ্য দপ্তরে এদিনের কর্মসূচির সূচনা হয় দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী নিজ হাতে উত্তোলন করেন লাল পতাকা। এ সময় পার্টির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব যেমন নরেশ জমাতিয়া, পবিত্র কর, কান্তি চক্রবর্তী, রমেন্দ্র চক্রবর্তী সহ বহু পার্টিকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। পতাকা উত্তোলনের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “পহেলা মে কেবল একটি দিন নয়, এটি হলো শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও অধিকার আদায়ের প্রতীক। বর্তমান পরিস্থিতিতে, যখন শ্রমিকের অধিকার ক্রমাগত খর্ব হচ্ছে, তখন আমাদের লড়াই আরও দৃঢ় করতে হবে।”
অন্যদিকে, একই দিনে আর এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান, অর্থাৎ সিআইটিইউ-র রাজ্য দপ্তরেও পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস। এদিন সকালে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন সিআইটিইউ-এর রাজ্য সম্পাদক মানিক দে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য সভাপতি শংকর প্রসাদ দত্ত, সহ-সভাপতি বিমল সরকার, চিত্তরঞ্জন দেববর্মা প্রমুখ। এই দপ্তরে পতাকা উত্তোলনের পর উপস্থিত নেতারা শ্রমিক শ্রেণির অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের উপর জোর দেন।
মানিক দে তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের দিনে আমরা শুধু অতীতের সংগ্রামকে স্মরণ করছি না, বরং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। শ্রমিকদের উপর যেভাবে আক্রমণ নেমে আসছে, বিশেষত কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির মাধ্যমে—তা রুখতেই আমাদের এই সংগঠন।”
শংকর প্রসাদ দত্ত বলেন, “পহেলা মে হলো ইতিহাসের সাক্ষী, এই দিনেই শিকাগো শহরে রক্ত দিয়ে শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি আদায় করেছিলেন। সেই পথেই আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।”
উভয় দপ্তরেই এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত কর্মী ও সমর্থকদের মুখে ছিল ঐক্যের গান, হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড ও লাল পতাকা। কর্মসূচির শেষে শহীদ বেদিতে মাল্যদান করে শহীদ শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ত্রিপুরা রাজ্যের প্রেক্ষাপটে যেখানে শ্রমজীবী মানুষের একটি বড় অংশ এখনো ন্যায্য মজুরি, কাজের নিশ্চয়তা ও সামাজিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত, সেখানে এই ধরনের কর্মসূচি শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়—বরং একটি সামাজিক ও রাজনৈতিক বার্তা বহন করে।