
ত্রিপুরা, TheNews9 বাংলাঃ ত্রিপুরা রাজ্যের বর্তমান বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী মানিক দে। তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় এখন প্রতিবাদী নাগরিকরা তাদের মতামত প্রকাশ করার জন্য শাস্তি পাচ্ছেন, এবং শাসক দলের নেতা-কর্মীরাও প্রতিবাদে অংশ নিলেও সুরক্ষিত থাকছেন না। বর্তমান সরকারকে তিনি “ফ্যাসিবাদী” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং বলেছেন যে, এখনকার শাসন ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করে সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করছে।

মানিক দে মন্তব্য করেন, “বিজেপির শাসনে সাধারণ নাগরিকরা কোনো ধরনের রেহাই পাচ্ছে না। তারা যারা সরকারের অনৈতিক কাজকর্মের প্রতিবাদ করছে, তারা সন্ত্রাসী, পুলিশি অত্যাচার ও শাস্তির মুখোমুখি হচ্ছে। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মানবাধিকারকে লঙ্ঘন করার এক বড় উদাহরণ।” ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী আরও বলেন, “রাজ্যের জনগণ যে তাদের মত প্রকাশ করতে পারবে না, তা যেনো স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র রাজ্যের সাধারণ মানুষকেই নয়, শাসক দলের কিছু নেতা-কর্মীকেও শাস্তির মধ্যে ফেলছে, যারা সরকারের ভুল ও খারাপ কাজের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।”
এদিকে, ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপি সরকারের মন্ত্রী রতন লাল নাথ সম্প্রতি জাত পরিচয় তুলে জীতেন্দ্র চৌধুরীকে আক্রমণ করেছিলেন। এই ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রতিবাদকারীরা দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের মন্ত্রীর এই আচরণ সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে, যা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়াচ্ছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আগরতলায় এক বিশাল লালঝান্ডা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের জাতি-বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছে এবং নিজেদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে সরকারের প্রতি একাধিক দাবী জানিয়েছে। এই বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় সমাজকর্মীরা এবং রাজনৈতিক দলের সদস্যরা, যারা সরকারকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
অন্যদিকে, ত্রিপুরায় বিরোধী দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকার তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং তাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। তাঁরা বলেন, “এই ধরনের কার্যকলাপ রাজ্যের গণতন্ত্রের জন্য বিপদজনক হতে পারে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার উদ্দেশ্যে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা মানুষের স্বাধীন মতামত ও বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত করছে।”
এই পরিস্থিতি রাজ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ত্রিপুরা সরকার যদি শীঘ্রই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনে, তাহলে তা রাজ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক বৈরিতার কারণে আরও বড় বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে ত্রিপুরার জনগণ এবং রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের কাছে ন্যায্যতার দাবি করছেন, এবং রাজ্যে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ও মানুষের অধিকারের রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন।