ত্রিপুরার বিখ্যাত চিকিৎসক ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের সম্মিলিত উদ্যোগ—প্রায় দুই হাজার মানুষের বিনামূল্যের চিকিৎসা পরিষেবা, ওষুধ বিতরণে অভূতপূর্ব সাড়া।
রবিবার, জোলাইবাড়ি । রিপোর্ট-বাহাদুর ত্রিপুরাঃ জোলাইবাড়ি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জুবিলি উদযাপনকে স্মরণীয় করে তুলতে বিদ্যালয়ের এলামনাই সেলিব্রেশন কমিটির উদ্যোগে আজ অনুষ্ঠিত হলো এক ঐতিহাসিক মেগা স্বাস্থ্য শিবির। এই স্বাস্থ্য শিবির শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের আবেগ নয়, বরং এলাকার সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে বয়স্ক ও অসহায় নাগরিকদের জন্য এক বিরল সুযোগ এনে দিয়েছে।

এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যে বহিঃরাজ্যনির্ভর চিকিৎসার সমস্যায় ভুগছিলেন, সেই সমস্যার সমাধান করে আজ প্রথমবারের মতো ত্রিপুরার নামী-দামী চিকিৎসকদের সরাসরি পরিষেবা পৌঁছে গেল জোলাইবাড়ির মানুষদের কাছে। এদিনের শিবিরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডঃ গৌতম মজুমদার, ডঃ নীলরতন মজুমদার সহ একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তাঁরা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে শুধু গর্ব বাড়িয়েই গেলেন না, বরং সমাজকে ফিরিয়ে দেওয়ার এক মানবিক দৃষ্টান্তও স্থাপন করলেন।
মেগা স্বাস্থ্য শিবিরের মূল উদ্দেশ্য ছিল—এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ। বিশেষ করে বহু প্রবীণ নাগরিক যারা আর্থিক সংকট বা দূরত্বের কারণে বাইরে চিকিৎসা করাতে পারেন না, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হন এই শিবির থেকে। সকাল থেকেই প্রায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাতে থাকেন বিভিন্ন চিকিৎসা পরিষেবা পেতে।
এই বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিদর্শনে আসেন দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক মোহাম্মদ সাজ্জাদ পি, জোলাইবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান তাপস দত্ত এবং দক্ষিণ জেলার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য স্থায়ী কমিটির সদস্য শম্ভু মানিক। তাঁরা শিবিরের সার্বিক ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন এবং বিদ্যালয়ের এই মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আয়োজক দলের সদস্য দীপক রায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, বিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথমবার এ ধরনের বৃহৎ মাপের স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করা হয়েছে যেখানে বহিরাগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও জানান, প্রায় দুই হাজার মানুষকে এই শিবিরে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেন—এই মেগা স্বাস্থ্য শিবির কেবলমাত্র একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং জোলাইবাড়ি এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসুরক্ষার একটি মাইলফলক। যারা বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেন না, তাদের জন্য বাড়ির কাছে এমন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সত্যিই এক গর্বের বিষয়। স্থানীয় মানুষও বিদ্যালয়ের এই মহান উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
সামগ্রিকভাবে, জোলাইবাড়ি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্লাটিনাম জুবিলির এই মানবিক অধ্যায় শুধু বিদ্যালয়েরই নয়, বরং পুরো এলাকার মানুষের হৃদয়ে এক অনন্য ছাপ রেখে গেল।








